চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে যাওয়ায় রমজানের আগে খেজুর আমদানি উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পায়। অবাধে আমদানির সুযোগে শুল্ক ফাঁকি দিতে ঢাকার এক আমদানিকারক নিম্নমানের খেজুর ঘোষণায় ভালো মানের খেজুর খালাসের আয়োজন শেষ করেছিলেন।
চূড়ান্ত পর্যায়ে আটকে দিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। আর কায়িক পরীক্ষার মাধ্যমে বেরিয়ে আসে প্রায় ৪৬ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকির প্রমাণ। তবে মিথ্যা ঘোষণার পরও মামলা না করেই পণ্যের চালানটি ছেড়ে দেওয়ার সব কার্যক্রম শেষ করেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। মিথ্যা ঘোষণার পরও একই আমদানিকারকের আরও দশ কনটেইনার পণ্য সর্বনিম্ন ভ্যালুতে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষ করেছেন শুল্ক কর্মকর্তারা।
শুল্ক গোয়েন্দাদের তৎপরতার পর নাটকীয়ভাবে পণ্যের চালানগুলোর লক করার আগ মুহূর্তে পোস্ট এন্ট্রির মাধ্যমে ভ্যালু বাড়িয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ ব্যাপারে আমদানিকারক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডেনা ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে সৌদি আরবের মরিয়ম খেজুর আমদানি করেন ঢাকার আমদানিকারক মেসার্স মো. সহিদুল্লাহ হোসাইন। ৯০ হাজার ২৫০ ডলার মূল্যমানের খেজুরের পরিমাণ ৯ হাজার ৫০০ প্যাকেট। এই চালানে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শুল্ক ফাঁকি দিতে ভালোমানের খেজুরকে নিম্নমানের ঘোষণা দিয়ে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষ করে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের শুল্কায়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারাও চার ডলারে শুল্কায়নের পণ্য থাকার পরও আড়াই ডলারে বিষয়টি খালাসের প্রক্রিয়া শেষ করেন। কিন্ত বাদ সাধে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মিথ্যা ঘোষণায় খেজুরের পণ্য চালান খালাস হচ্ছে—এমন সংবাদে চালানটি আটকে দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি এক চালানে মিথ্যা ঘোষণায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয় ৪৬ লাখ টাকা। যার শাস্তি সর্বোচ্চ ৪০০ শতাংশ জরিমানা। এ ছাড়া ফৌজদারি মামলাও হতে পারে। আর আগে থেকেই চালানটি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত থাকলেও সঠিকভাবে পরীক্ষণ ও শুল্কায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। চালানের সিঅ্যান্ডএফ ছিল করতোয়া ট্রেডিং করপোরেশন।
+ There are no comments
Add yours