বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পাবনা অফিস যেন দালাল চক্রের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স, নবায়ন, যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিটসহ সংশ্লিষ্ট কাজ করিয়ে দেওয়ার নামে কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই দালালরা।
এখানে দালাল ধরলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষাও দিতে হয় না। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ির রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার বিধান থাকলেও উৎকোচের বিনিময়ে লার্নার (শিক্ষানবিশ) কার্ডধারীদের নিয়মিতই রেজিস্ট্রেশন দিয়ে যাচ্ছেন দালাল চক্রের সদস্যরা।
ফটোকপির দোকানে ২০০ টাকার বিনিময়ে ডাক্তারি পরীক্ষার সার্টিফিকেট পাওয়া যাচ্ছে। আবার কিছু নির্দিষ্ট ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে যোগসাজশ করে সেখানে সেবাগ্রহীতাদের পাঠানো হয়। বেশি টাকা দিলে দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষার সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
গত সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার পাবনা বিআরটিএর অফিস ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের দাবি- এই অফিসে কোনো দালাল নেই। এখানে নিয়মমাফিক কাজ হয়।
সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, গাড়ির ফিটনেস লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে এলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। দালাল না ধরলে কোনো কাজই হয় না এই দপ্তরে। লাইসেন্স প্রতি দুই গুণ, তিন গুণ টাকা বেশি দিতে হয়। দালাল ও অফিসের কর্মকর্তারা এসব অর্থ ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছে। কেউ পাঁচ বছর আগে আবেদন করেও কার্ড পাচ্ছেন না। কেউ আছেন আট বছর আগে রিনিউ করতে দিলেও দালালদের টাকা না দেওয়ায় রিনিউ হচ্ছে না।
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ আলী খান বলেন, আগে তো হয়রানির শেষ ছিল না। এখন একটু ভালো হচ্ছে। ওখানে কিছু দালাল আছে ডাবল টাকা নেয় আর মানুষকে হয়রানি করে। ঠিকমতো কাজ করে দেয় না। কিছু শহরের, কিছু মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন পাবনা বিআরটিএ অফিসে দালালির কাজ করে। এসব বহিরাগত লোকজনের জন্যই তো সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের পাবনা অফিসে কোনো দালাল নেই। আপনারা তো দেখতেই পাচ্ছেন এখন অফিসে কোনো লোকই নেই। তাহলে দালাল আসবে কীভাবে? তবে দুই-একটি মাঝে মধ্যে সুপারিশ আসে। যেমন আপনাদের মেয়র মহোদয় সুপারিশ করল ফোন দিয়ে। এ ধরনের সুপারিশ ছাড়া কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই।
+ There are no comments
Add yours