
দেশের জেলায় জেলায় স্বর্ণের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব ল্যাব আছে, সেগুলোতে নিয়মিত পরিদর্শন করা জরুরি। স্বর্ণের সার্টিফিকেট দিচ্ছে যে ল্যাবগুলো, সেগুলোর মান ঠিক আছে কি না, তা কঠোরভাবে নজরদারির পরামর্শ দিয়েছেন বাজুস ফেয়ারে আয়োজিত সেমিনারের বক্তারা।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে বাজুস ফেয়ার ২০২৪-এ ‘অলঙ্কারের মান নিয়ন্ত্রণে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি এম এ হান্নান আজাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআই-এর মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাজুসের সহ-সভাপতি সমিত ঘোষ অপু, ডায়মন্ড বিশেষজ্ঞ তানভির আল মাহমুদ খান।
সেমিনারে বিভিন্ন জেলা পর্যায় থেকে আসা স্বর্ণের মাননিয়ন্ত্রক ও ব্যবসায়ীরা বলেন, মফস্বল এলাকায় সেভাবে স্বর্ণের মান নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, স্বর্ণ এক ল্যাবে নকল, অন্য ল্যাবে গিয়ে তা আসল হয়ে যায়। সেই সব ল্যাবে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, যা এই জুয়েলারি খাতের ব্যবসার জন্য ক্ষতিকর। এই অবস্থা থেকে অবসান পেতে হলে বাজুস এবং সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি গোল্ডের মানের ক্ষেত্রে হলমার্ক ল্যাবের সার্টিফিকেটের পাশাপাশি বিএসটিআই-এর সমন্বয় থাকা প্রয়োজন।
সেমিনারে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমাদের দেশে স্বর্ণের মান নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরি। কারণ, প্রান্তিক অঞ্চলে সাধারণ মানুষ জুয়েলারিকে জীবনের সঞ্চয় ও সম্পদ হিসেবে মনে করেন। তাই এই স্বর্ণের মান ঠিক থাকা খুবই জরুরি।
বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড (বিএবি) থেকে দেশের স্বর্ণের ল্যাবগুলোকে নতুন করে সনদ দিয়ে পরীক্ষার মান বজায় রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমাদের বিএসটিআই যদি বিএবির সঙ্গে পরামর্শ করে; আমাদের যেসব ল্যাব বর্তমানে আছে, সেগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে এসব ল্যাবগুলো নিয়মিত ইন্সপেকশন করা প্রয়োজন। ফলে যারা গোল্ডের মানের সার্টিফিকেট দিচ্ছে, তাদের মানের বিষয়টা ঠিক আছে কি না, সেটা কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে স্বর্ণের মান নিয়ে বাজুসের সহ-সভাপতি সমিত ঘোষ অপু বলেন, স্বর্ণের মান নিয়ে যখন কথা বলি, তখন একটি নাম সবার প্রথমে আসে, তা হচ্ছে হলমার্ক। এই হলমার্ক পরীক্ষাগারে স্বর্ণের মান নির্ণয় করে, যা ক্রেতাদের কাছে একটি নির্ভরযোগ্যতা পেয়ে এসেছে। আমরা গ্রাহকদের সব সময় বলি হলমার্ক করা ছাড়া যেন স্বর্ণ না কেনে। হলমার্কের ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করে কিছু অসাধু। এ বিষয়ে সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে। তাহলে ক্রেতারা কম প্রতারিত হবে।
বাজুসের মুখপাত্র ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাজুস শুধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থই দেখে না, ক্রেতাদের স্বার্থও দেখে। দেশে ২০০৭ সাল থেকে হলমার্কের প্রচলন শুরু হয়। কিন্তু দেশে হলমার্ক করার জন্য অনেক সস্তা মেশিন ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে সঠিক মান পাওয়া যায় না। তাই আমরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যখন একটি স্বর্ণ সার্টিফিকেট করে দেই, তারপর সেই স্বর্ণ বিএসটিআই-এর ল্যাবে আরও নিখুঁত পরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে।
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                        
                
                                    
                                    
                                    
                            
                            
                            
                                                        
                                
                        
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
                                                
+ There are no comments
Add yours