শহুরে প্রকৃতিতে এসবের কিছু কমতি থাকলেও সংরক্ষিত বাগানগুলোতে দেখা মিলেছে বাহারি সব ফুলের। তাছাড়া শীতের জীর্ণতা আর শুষ্কতাকে পেছনে ফেলে বসন্তের সজীবতাকে বরণ করে নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন মানুষও।
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত’— এ দিনের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সবমিলিয়ে কদর বেড়েছে ফুলের রানি গোলাপসহ অন্যদের। রাজধানীর খুচরা ফুলের বাজারগুলোতেও এখন জমজমাট অবস্থা।
একইদিনে বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও সরস্বতী পূজা হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ২০ কোটি টাকারও বেশি ফুল বিক্রির প্রত্যাশা করছেন। তারা বলছেন, প্রাকৃতিক কারণে বছরের শুরুর দিকে অধিকাংশ ফুলের আবাদ হয়। তবে এখন চাষিরা সারা বছরই কমবেশি ফুল চাষ করে থাকেন। এর মধ্যে বছরের শুরুর ২-৩ মাস ভরা মৌসুম।
বাকি সময়ে ঢিমেতালে বিক্রির পর বিক্রেতাদের চাওয়া থাকে নতুন বছরের শুরু থেকেই যেন চাঙ্গা থাকে ফুলের বাজার। আর ফেব্রুয়ারির শুরুতে এটি দাঁড়ায় জমজমাট অবস্থায়। পরপর বেশ কয়েকটি দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। বাজার দাঁড়ায় কোটি-কোটি টাকায়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ফুলের ব্যবসা করার মাস হচ্ছে ফেব্রুয়ারি। এসময়ে চাহিদাও থাকে বেশি। পাইকারিতেও কিছুটা বেশি দাম দিতে হয়। সেই প্রভাব পড়ে খুচরা বাজারে।
ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় ফুলের পাইকারি ও খুচরা বাজার রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শাহবাগ ও আগারগাঁও এলাকার ফুলের দোকান। সরেজমিনে এ দুই বাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্য সময়ের চেয়ে এ জায়গায় এখন ভিড় বেশি। ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। সবার দৃষ্টি ১৪ ফেব্রুয়ারি দিকে।
কীভাবে ওই দিন নিজের দোকানের ফুলগুলো সবার সামনে ফুটিয়ে তোলা যায় সেই পরিকল্পনা করছেন তারা। আবার ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়েও বেশি হয়ে থাকে। যার কারণে প্রতিদিনই গাড়ি সাজানো, ফুলের রিং, ডালা তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে তাদের ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব ফুলের মধ্যে রয়েছে– গাঁদা, রজনিগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, রথস্টিক, জিপসি, গ্যালেনডোলা ও চন্দ্রমল্লিকা। যশোর ও ঝিনাইদহ থেকে চাষিরা এসব ফুল নিয়ে আসেন। সাভার, মানিকগঞ্জ ও ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকার চাষিরাও গোলাপ, রজনিগন্ধা, ছোট-বড় গাঁদা ফুল নিয়ে আসেন।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর ফুলের ফলন ভালো হয়েছে। চাহিদাও রয়েছে বেশ। সবমিলিয়ে সামনের ভালোবাসা দিবসের দিন অনেক ফুল বিক্রির প্রত্যাশা করছেন সবাই। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে অতিরিক্ত ফুলের প্রি-অর্ডারও করে রেখেছেন অনেকে।
+ There are no comments
Add yours