না ধুয়ে বরই খাওয়ার পর ‘অজানা ভাইরাসে’ আক্রান্ত হয়ে পর পর দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে রাজশাহীতে। হঠাৎ করে দুই বোনের এমন মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগও।
অনুসন্ধানে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম যাচ্ছে রাজশাহী।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা থেকে রিপোর্ট আসে যে- ওই দুজন শিশুর মৃত্যু নিপাহ ভাইরাসে হয়নি।
তাদের নিপাহ ভাইরাসের রিপোর্ট নেগেটিভ। অন্য কয়েকটি নমুনা ভাইরাসের সঙ্গেও ম্যাচ হয়নি। এরপরই এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই দলটি শিগগিরই রাজশাহী আসবে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহাম্মদ বলেন, নমুনা পরীক্ষা কিছু না পাওয়ার পর তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (প্রশাসন) শরণাপন্ন হন। একটা বিশেষজ্ঞ দলকে রাজশাহী পাঠানোর অনুরোধ জানান।
দুই দিনের ব্যবধানে অজানা ভাইরাসে মারা যাওয়া ওই দুই শিশুর মধ্যে একজনের নাম মুনতাহা মারিশা ও মুফতাউল মাশিয়া। আগামী ২ মার্চ মুনতাহা মারিশার বয়স হতো দুই বছর। আর আগামী ৩০ মে পাঁচ বছর পূর্ণ হতো মুফতাউল মাশিয়ার। তাদের বাবার নাম মনজুর রহমান (৩৫)। তিনি রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক। বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। তবে স্ত্রী পলি খাতুন (৩০) ও তাদের দুই শিশুকন্যা নিয়ে চারঘাটের সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারেই থাকতেন।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ চত্বরে থাকা গাছের বরই কুড়িয়ে এনে দুই শিশুকে খেতে দিয়েছিলেন তাদের গৃহকর্মী। না ধুয়েই সেই বরই খেয়েছিল এই দম্পতির দুই শিশু সন্তান। এরপর তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পরদিন বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ ছোট মেয়ে মারিশার শরীরে ভীষণ জ্বর আসে। এ সময় তারা বার বার পানি পান করছিল। দুপুর থেকে বমি শুরু হয়। তখন মেয়েকে নিয়ে তারা একটি মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীর সিএমএইচ হাসপাতালে আসছিলেন।
মাইক্রোবাসেও মারিশা বুকের দুধ পান করে। তবে শহরের অদূরে কাটাখালী এলাকায় মায়ের বুকেই মৃত্যু হয় মারিশার।
শনিবার বিকেলে নিকট স্বজনদের মাধ্যমে মাশিয়ার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যার পরে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে মরদেহ দাফন করা হয়। সেখানে গত বুধবার রাতে ছোট মেয়ে মারিশাকেও দাফন করা হয়েছে।
+ There are no comments
Add yours