২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইসলামবাগ এলাকার একটি ভাড়া করা ভবনে ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে কলেজপাড়া রোডে নিজস্ব অফিসে কার্যক্রম শুরু হয়। ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০টি আবেদন জমা পড়ে।
ঠাকুরগাঁও পৌরশহর, ইসলামবাগ ও কলেজ রোডের পাশে সারিবদ্ধ কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকানের সাইনবোর্ড। এসব দোকান ঘিরেই তৎপর পাসপোর্ট দালাল চক্রের সদস্যরা। এ ছাড়া পাসপোর্ট অফিসের সামনে গেলে দালাল চক্রের কয়েকজন সদস্যকে সেখানে দেখা যায়। তারা সেবাপ্রত্যাশীদের বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে তাদের পরিচিত কম্পিউটারের দোকানে নিয়ে যান। তারা বিভিন্ন অজুহাতে গ্রাম থেকে আসা মানুষদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালাল চক্রের সদস্যরা।
পাসপোর্ট অফিসের কম্পাউন্ডে সিটিজেন চার্টারে উল্লেখ আছে পাসপোর্টের নিয়মাবলি। টাকার অঙ্কে উল্লেখ করা হয়েছে, অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে ৪৮ পৃষ্ঠার এবং পাঁচ বছর মেয়াদসহ নিয়মিত পাসপোর্ট করতে ৪ হাজার ২৫ টাকা (বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে ১৫% ভ্যাটসহ) ফি জমা দিতে হবে। এই পাসপোর্ট পেতে ১৫ থেকে ২১ দিন অপেক্ষা করতে হবে। আর জরুরি পাসপোর্ট করতে লাগবে ৬ হাজার ৩২৫ টাকা। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৭ থেকে ১০ দিন।
অন্যদিকে ১ থেকে ৩ দিনের মধ্যে অতীব জরুরি পাসপোর্ট পেতে চাইলে দিতে হবে ৮ হাজার ৫০ টাকা। এ ছাড়া ৪৮ পৃষ্ঠার এবং দশ বছর মেয়াদসহ নিয়মিত পাসপোর্ট করতে ৫ হাজার ৭৫০ টাকা লাগবে। এই পাসপোর্ট পেতে অপেক্ষা করতে হবে ১৫ থেকে ২১ দিন। আর ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে জরুরি পাসপোর্ট পেতে চাইলে ফি দিতে হবে ৮ হাজার ৫০ টাকা। এর বাইরে অতীব জরুরি পাসপোর্ট ১ থেকে ৩ দিনের মধ্যে নিতে চাইলে শুধু ফি গুনতে হবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
সরকারি চাকরিজীবী যাদের এনওসি, অবসর সনদ (পিআরএল) রয়েছে তারা নিয়মিত ফি জমা দেওয়া সাপেক্ষে জরুরি সুবিধা/জরুরি ফি জমা দেওয়া সাপেক্ষে অতীব জরুরি সুবিধা পাবেন। পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে সমপরিমাণ ব্যাংক চালান প্রযোজ্য।
কথা হয় পাসপোর্ট করতে আসা তারা মিয়া নামের আরও একজনের সঙ্গে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, কম্পিউটারের দোকানে অনলাইনে আবেদন করতে গেলে তারা বলেন, আমরাই করে দিচ্ছি। আপনি করলে অনেক বেশি সময় লাগবে। সেজন্য আমি কম্পিউটারের দোকানে যে দালাল ছিল তাকে আমার কাগজসহ সবকিছু দিয়েছি। বেশি টাকা লাগছে কিন্তু কাজটা খুব সহজেই হচ্ছে। এর আগে আমি একবার নিজে করার চেষ্টা করেছিলাম। অনেক ঘুরতে হয়েছে। বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। সেজন্য বিরক্ত হয়ে দালালের মাধ্যমে কাজটা করাতে বাধ্য হচ্ছি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলিম উদ্দিন ভূঁঞা বলেন, আমাদের অফিসের এমন কোনো কর্মকর্তা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত নয়। যারা অভিযোগ করছে তা ভিত্তিহীন। তারপরও আমাদের অফিসের কেউ যদি এসব কাজে জড়িত থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝাড়ুদার শাজাহানের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনি (শাজাহান) মানুষকে সহযোগিতা করেন। সার্বিক বিষয়ে জানতে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তথ্যঃ ঢাপো
+ There are no comments
Add yours