আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল যে লক্ষ্য নিয়ে গঠিত- তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ চায় শরিক দলগুলো। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান কী হবে সেটির ওপর ভিত্তি করেই ১৪ দলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
এমনটি মনে করেন জোট নেতারা। অতীতে বৈঠকে আওয়ামী লীগ একতরফা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেভাবে জোট চলেছে। আগামীতেও এটা হলে তো সমস্যার সমাধান হবে না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ১৪ দল বেশ নিষ্ক্রিয়। জোটের অস্তিত্ব নিয়ে ১৪ দলের ভেতর থেকেই ইতোমধ্যে বিভিন্ন কথা উঠেছে। শরিকরা মনে করছেন, তাদের জোটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। শুধু তাই নয়- জোট আছে কি, নেই এ প্রশ্নও উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে জোটকে সক্রিয় করার কথা বলছে আওয়ামী লীগ। দ্রুতই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।
সোমবার (১৩ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৪ দলীয় জোট আছে। জোট নেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, জোট আছে এবং যথাসময়ে আলাপ আলোচনার জন্য বসবেন।
এর আগে গত ২ মে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৪ আছে, থাকবে। জোট নেতাদের সঙ্গে বসবো।
তবে ১৪ দল পুনরায় সক্রিয় হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেভাবে জোট চলছে সেভাবে আর দেখতে চান না নেতারা। শুধু থাকা নয়, যে লক্ষ্যে এই জোট গঠিত হয় সেই কর্মসূচি ও প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন চায় তারা। এর বাইরে শুধু বৈঠক করে জোটের স্বকীয়তা থাক, সেটি চান না নেতারা। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান সম্পর্কেও তারা স্পষ্ট হতে চান। জোটের প্রধান দলের বক্তব্য জানার পর শরিক দলগুলো তাদের অবস্থান তুলে ধরবে বলে ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা বলেন, ১৪ দলের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা আছে, কিন্তু সাংগঠনিকভাবে নিষ্ক্রিয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জোটের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলের বৈঠকের কথা বলেছেন। জোটের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, কী ফর্মে বৈঠক ডাকা হবে, বৈঠকের আলোচ্য বিষয় কী হবে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। শুধু জোট ধরে রাখার জন্য বৈঠক করে সংকট কাটবে না। বৈঠকে আওয়ামী লীগ যেটা বলবে, যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই কার্যকর হবে, অতীতে যেটা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট সেই অবস্থায় নেই বলেও তারা উল্লেখ করেন।
এদিকে ১৪ দলের ভবিষ্যৎ পরিণতির কথাও চিন্তা করছে জোট, সে হিসেবেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। আওয়ামী লীগ ছাড়া এ জোটে অন্য যে দলগুলো রয়েছে তারা এক জায়গায় থাকার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ১৪ দল থাকলে জোটের নেতারা কি ধরণের তৎপরতা চায় সেটি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছে ওয়ার্কার্স পাটি। ইতোমধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সাম্যবাদী দলের নেতারা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন। ন্যাপ, কমিউনিস্ট কেন্দ্রসহ অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা বিষয়টি আলোচনা হবে। এর পর দ্বিতীয় দফায় এ দলগুলো নেতারা আলোচনা করবেন বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
+ There are no comments
Add yours