আকাশ মার্মা মংসিং বান্দরবানঃ
অরন্য ভরা সবুজ শ্যমলী ছোয়াঁ আর উচুঁ উচুঁ পাহাড়ের আলোকের যেন গড়ে উঠা পার্বত্য জেলা বান্দরবান। সেই বান্দরবানে রুপ ও বৈচিত্র্যময় যেন আগলে টানে এসো দেখে যাও পাহাড় পর্বত ঝিড়ি ঝর্ণা ও সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদী। আদিকালে বান্দরবানে ছিল পাহাড়ভর্তি গাছপালা, শুকিয়ে যেতনা সেই ঝিড়িঝর্ণা প্রাকৃতিক পানি উৎস গুলো, ছিল ভিন্ন রকমারি পশু পাখির ডাক, ছিল বান্দরবান গড়ে ওঠা কথিত সেই হাজারও বানর। অপরুপ প্রাকৃতিক দিয়ে গড়া বান্দরবান নাম ছিল “পাহাড়ের কন্যা” । বান্দরবান গড়ে উঠা রয়েছে একটি কথিত গল্পও রয়েছে সেই কথিত গল্পের সুর। সেই সুরে ছন্দে মেতে উঠত আদিবাসী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও। বান্দরবান গড়ে উঠার পর হতে শুরু হত পাহাড়ে ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান “রাজপুন্য মেলা” । রাজপুণ্য মেলায় শুরু হলে পাহাড়ে আদিবাসীদের গোছানো হত আদিকালে নিয়মনীতি কার্যকলাপ গুলো। দেওয়া হত বান্দরবানে রাজার নিকটস্থ পাহাড়ের জমি ও সম্পদের খাজনা, পশু পাখি, মদ, পানি ইত্যদি। সেই সাথে শুরু হত আদিবাসীদের নাচ পাখুং পোয়েঃ, যেয়্য।
পাহাড়ে পর্বতে বসবাস করা আদিবাসী তাদের জীবনযাপন যেন দেখে অনুভূত হতে হবে পাহাড়ে ঐতিহ্য সংস্কৃতি ও জুম চাষে ধানের সুগন্ধী ঘ্রাণ। কিন্তু বর্তমান পর্যায়ের সেই ঘ্রান এখন আগুনে দহনে পোড়ার দদ্ধ । পাহাড়ের কান পেতে শোনা যায় ” হে মানব জাতি আমাকে বাচাঁও এইভাবে আমার গড়ানো পাহাড় পর্বত নদী ঝিড়ি ঝর্ণা প্রাকৃতিককে ধংব্বস করে দিও নাহ”।
পাহাড়ের আনাচে কানাচেঁ ও গভীর জঙ্গলে পাথর ভাঙ্গা যন্ত্র ,ট্রাক ভর্তি পাথর বোঝায় করে নিয়ে যাচ্ছে এক শহরে প্রান্তে। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যময় কে রক্ষা করতে রুখে দাঁড়ানো মত নাই কারো সাহস । আর সেই সুযোগে পাহাড়ের ক্ষমতাসীনদে আয়ত্তে চলছে প্রাকৃতিককে ধব্বস করা। সেই সাথে আদিবাসিদের জীবন যাপন যেন অনেকটাই বিপদ সম্মুখীন হয়ে পড়েছে বর্তমান যুগে। তবে হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ে ঘ্রাণ, শুকিয়ে যাচ্ছে ঝিড়িঝর্ণা পানি, পাথর উত্তোলনে মেতেছে খেকোদের, তবুও প্রশাসনে নিরবতা, নেই কোন উদ্যেগ নেই কোন অভিযান। রুমা,থানছি,লামা, আলীকদম, রোয়াংছড়ি, চিম্বুক, শহরস্থল গুলোতে গভীর জঙ্গলে চলছে পাথর উত্তোলন, পাথর ভাঙ্গা মেশিন, এমনকি পাথর গুলোকে সরে নেওয়া জন্য রয়েছে ট্রাক ও।
কিন্তু উদ্যেগ নেবার মত ক্ষমতাসীন্দের সাথে টক্কর দেওয়া সাহস নাই কোন মানুষের । তবে একদিন এই আদিবাসীরা পাহাড়ে পানি জন্য হাহাকার সম্মুখীন হবে। আদিবাসীদের জীবন যাপন থমকে যাবে। নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিতে হবে নিজ জন্মভুমি পাহাড়ের। সেই পাহাড়ের অভাব অনটনে একদিন লাশ মিছিল বয়বে। তখন পাহাড় কান্না যেন উত্তপ্ত চিৎকারে বলবে “আমি কি দোষ করেছি ” আমার বুঁকে বয়ছে হাজার লাশে’র মিছিল” ।
আজও মানবজাতি প্রকৃতিক পাহাড়ে চিন্তা না করে অর্থে লোভে লালশায় বিলীন করে দিচ্ছে নিজ ভূমি। বর্তমানে সেই সবুজ শ্যমলমায়া গুলো হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আজ সেই আদিবাসীদের প্রথা সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আদিকাল হতে পার্বত্য এলাকা আরেকটি আদিবাসিদের বাড়ি নাম “মাচাং ঘর”। মাচাং নামক ঘরটিও কালপরিবর্ত কারনে এখন পরিণর হয়েছে ইট দিয়ে তৈরী করা দালান কোটা। যুগেযুগ তাল মেলানো কারনে আজ হারিয়ে গেছে সেই ঐতিহ্য ঘর গুলোও। পার্বত্য এলাকায় ভরে গেছে পর্যটন, হোটেল, মোটেল গুলোও। কি হবে আগামীতে? পাহাড় পর্বত কি তাহলে ধবস হয়ে যাবে? এই পাহাড় পর্বতকে রক্ষা করবে কে? প্রশ্ন থেকে যায়।
+ There are no comments
Add yours