কালুরঘাট সেতু; ৬ বছর পর নতুন করে ফিজিবিলিটি স্টাডির সিদ্ধান্ত

Estimated read time 1 min read
Ad1

আজিজুল হক চৌধুরী,চট্টগ্রাম:

কালুরঘাট সেতুর খরা যেন কাটছেই না।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখ লাখ মানুষ যখন নতুন সেতুর আশায় তীর্থের কাকের মত অপেক্ষায় আছে, সেখানে দীর্ঘ ছয় বছর পর আবারও নতুন করে কালুরঘাট সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গত ১৯ মে বুধবার ঢাকাস্থ রেলভবনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এটি সিঙ্গেল ট্র্যাক রেল-কাম সড়ক সেতু হবে নাকি ডাবল ট্র্যাক রেল-কাম সেতু হবে তা সমীক্ষা প্রতিবেদনের ওপরই নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ফলে আগের সমীক্ষা, সেতুর ডিজাইন, বাজেট সবকিছু বাদ যাবে। ৬ মাসের মধ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করতে হবে। নতুন সমীক্ষার পর নতুনভাবে হবে সেতুর ডিজাইন, বাজেট, প্রকল্পের মেয়াদসহ সবকিছু।

এর আগে রেল কর্তৃপক্ষ দুই লেনের সড়ক-কাম ডুয়েলগেজ সিঙ্গেল ট্র্যাক রেল সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই অনুযায়ী প্রকল্পের ড্রয়িং-ডিজাইন, বাজেট এবং প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রকল্পে বাধা সৃষ্টি করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

আগের সমীক্ষা অনুযায়ী নদী থেকে সেতুর উচ্চতা ৭ দশমিক ৬ মিটার নেভিগেশনের ছাড়পত্র নিয়ে করা হয়েছিল। তবে এখন অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুসারে ১২ দশমিক দুই মিটার নেভিগেশন ছাড়পত্র রেখে সমীক্ষা করতে হবে।

তাই বৈঠকে নতুন সমীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়। সড়কের সঙ্গে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন রেলসেতু নির্মাণ প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাজনক কিনা তা সমীক্ষার পরই জানা যাবে বলে জানান সেতু সংশ্লিষ্ট রেলওয়ের এক প্রকৌশলী।

এই ব্যাপারে রেলওয়ের পরিচালক প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা জানান, রেল ভবনে ১৯ মে রেলপথমন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে বৈঠকে কালুরঘাট সেতুর নতুন করে ফিজিবিলিটি স্টাডির সিদ্ধান্ত হয়েছে, বৈঠকটিতে দক্ষিণ কোরিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টরও উপস্থিত ছিলেন।

নতুন করে ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে সেতুর অর্থদাতা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। ৬ মাসের মধ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করতে হবে। তারপর সেতুর ডিজাইন হবে, বাজেট হবে। এবার যেহেতু সেতুর উচ্চতা বেড়েছে, সুতরাং আগের ডিজাইন আর কাজে লাগবে না। নতুন ডিজাইনে সেতুর ব্যয় কত হবে তা সমীক্ষার পর বলা যাবে।

উল্লেখ্য যে, ব্রিটিশ আমলে কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত কালুরঘাট সেতুটির ব্যবহার এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতুরে উভয় পাশের ডেক ও লোহার বেড়া প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। সেতুতে বড় বড় গর্ত। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন দুর্ভোগ নিয়েই যানবাহন চলাফেরা করছে। প্রতি বছর সেতুটি মেরামত করতে হয়।

১৯৩১ সালে নির্মিত এই সেতুটি মূলত রেলসেতু ছিল। তবে ষাটের দশকে এটিকে রেল-কাম সড়ক সেতুতে রূপান্তর করা হয়। কালুরঘাট সেতুটি কেবল বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া ও মোহরাবাসীর দাবি নেই। এই সেতুটি এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সেতুর উভয় পাশের মানুষ সেতুটি নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে।

চট্টগ্রাম -৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য মাঈনুদ্দিন খান বাদল কালুরঘাট সেতু নির্মাণে জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সর্বত্র সোচ্চার ছিলেন। একইভাবে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদও সেতুটি নির্মাণে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours