আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার কাউখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী নৈকাঠিতে ১ সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের মামলায় ঘটনার ১সপ্তাহ পরে ২আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল র্যাব এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের ঝালকাঠির কির্ত্তীপাশা থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো রশিদ মৌলভীর ছেলে বাবুল সিকদার (৫৫), নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে লিটন (৩২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে রাতে রাজাপুর থানায় সোপর্দ করে। রাজাপুর থানা পুলিশ গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত গ্রেফতারকৃতদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২১মে) ভোররাতের দিকে সংঘবদ্ধ চক্র এ ঘটনায় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) শাখাওয়াত হোসেনসহ রাজাপুর থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভিকটিম (২৪) জানান, ৩ বছর আগে একই গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। বাবার দেওয়া জমিতে দালান (অসম্পূর্ণ) তৈরি করে স্বামীকে নিয়ে বসবাস করছেন। দেড় বছর আগে তাদের এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। শিশুর সাড়ে ৩ মাস বয়সে স্বামী সৌদিতে পাড়ি জমান। দীর্ঘদিন ধরে কাউখালী উপজেলার বিড়ালজুড়ি এলাকার মো. হানিফের ছেলে আলিম (২৬) মোবাইলে উত্ত্যক্ত করত। বৃহস্পতিবার রাতে ফোন দিয়ে আজেবাজে কথা শুরু করলে ফোন কেটে দিয়ে নম্বরটি ব্ল্যাক লিস্ট করে রাখা হয়। রাত আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে বাথরুমে ভেন্টিলেটরের ফাঁকা জায়গা দিয়ে প্রথমে আলিম প্রবেশ করে পেছনের দরজা খুলে দিলে আরও ৫-৬ জন ঘরে ঢোকে। আলিম যৌন নির্যাতন চালালে স্থানীয় মৃত সেকান্দার আলীর ছেলে খোকন সিকদার (৪৫) ও মৃত ইসরাইল হাওলাদারের ছেলে শাহ বারেক (৫০) তাকে সাহায্য করে। রশিদ মৌলভীর ছেলে বাবুল সিকদার (৫৫), নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে লিটন (৩২) এবং নৈকাঠির আলতাফ হোসেনের ছেলে মিলন (৩৩) পাহাড়া দেয়। এ সময় খোকন ও শাহ বারেক কানের দুল ও গলার চেনসহ সাড়ে ১৩ আনা ওজনের স্বর্ণালঙ্কার এবং ১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ভিকটিমের বাবা আ. করিম সিকদার জানান, মেয়েকে জায়গা দিয়ে ঘর তৈরিতে সহায়তা করায় সেখানেই শিশু সন্তান নিয়ে থাকতো। রাতে দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুরাতন বাড়ি থেকে ফেরার পথে খোকন, লিটু ও মাওদুদ হোসেন মনুকে যেতে দেখেছি। তবে তারাই যে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে তখন তা বুঝতে পারিনি।
স্থানীয় রাজা সিকদার জানান, রাতে ডাক চিৎকার শুনে বের হলে আলিম, খোকন, শাহ বারেক, বাবুল, লিটু ও মিলনকে দৌড়ে পালাতে দেখি। ভোররাতে হাল্কা আলোতে দেখে সবাইকেই চিনতে পেরেছি। রাজাপুর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ভিকটিমের সনাক্তকারীদের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে।
আসামীরা এতোদিন পলাতক ছিলো। ঝালকাঠিতে ঘোরাফেরা করার সময় তাদের র্যাব গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
+ There are no comments
Add yours