ইউনুস আলী,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে হত দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পের সরকারি টাকা আত্মসাথের অভিযোগ উঠেছে । শ্রমিকদের মজুরীর ১ লাখ ১২ হাজার টাকা আত্মসাথের অভিযোগে প্রতিকার চেয়ে দিনমজুররা।
বুধবার (১৪ জুলাই) প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মঞ্জু অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী ১০০ দিনের প্রকল্পের ২০২০-২১ অর্থ বছরে সরকারি টাকা আত্মসাথ করেছেন।
তিনি ওই এলাকার ১৪ জন শ্রমিকের প্রকল্পের তালিকায় নাম থাকার পরেও তাদেরকে বলেন তালিকায় তাদের নাম নেই। ফলে তাদের কাজে আসার দরকার নেই বলে জানানো হয়। এরপর শ্রমিকদের প্রথম পর্যায়ের টাকা বিতরনের পর অভিযোগকারী হতদরিদ্র শ্রমিকরা জানতে পারেন তালিকায় তাদের নাম রয়েছে এবং টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ১০০ দিনের কর্মসূচীর তালিকায় ৮১ নং আলেয়া, ৭০ নং ক্রমিকে রহিমা, ৭৯ নং ক্রমিকে মোর্শেদা ও ৫৭ নং ক্রমিকে জায়েদাসহ ৩১ নং ক্রমিকে খাদিজা, ৫৩ নং ক্রমিকে হাফিজা, ৫৮ নং ক্রমিকে অঞ্জলী রানী, ৫৭ নং ক্রমিকে সুমি বেগম, ৮৬ নং ক্রমিকে লুবানা, ৮৭ নং ক্রমিকে মর্জিনা, ৯৪ নং ক্রমিকে সুমাইয়ার তালিকায় নাম থাকলেও তারা প্রকল্পের টাকা পাননি। এভাবে ওই ইউপি সদস্য প্রথম কিস্তির জনপ্রতি ৮ হাজার টাকা করে তুলে আত্মসাথ করেছেন। বর্তমানে একই কৌশলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা উত্তোলন করার পায়তারা করছেন।
এছাড়া ওই তালিকায় ইউপি সদস্য’র স্বজন স্বচ্ছল পরিবারের সদস্য ৬৭ নং ক্রমিকে তার চাচা মাহবুব আলম, ৬৮ নং ক্রমিকে ভাই আহাদ আলী এবং নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউপি সদস্যর আপন চাচাত ভাই মোখলেছুর রহমানকে ৭৫ নং ক্রমিকে তালিকায় অন্তভূক্ত করেছেন। এভাবে ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মঞ্জু ১৪ জন শ্রমিকের প্রকল্পের তালিকায় নাম ব্যবহার করে জনপ্রতি ৮ হাজার টাকা করে ১ লাখ ১২ হাজার সরকারি টাকা আত্মসাথ করেছেন।
এদিকে হতদরিদ্র শ্রমিকরা ঘটনা জানতে পেরে বুধবার (১৪ জুলাই) ওই ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
গুনাইগাছ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুজ্জামান মঞ্জু বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তার স্বজন ও স্বচ্ছল পরিবারের সদস্যদের ওই তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা কাজ করেছে তারা টাকা পাবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদৌল্লা জানান, প্রকল্পে অনিয়ম ও টাকা আত্মসাথের বিষয়ে ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার পর সত্যতা খুঁজে পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
+ There are no comments
Add yours