বিপুল মিয়া,ফুলবাড়ী প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ফুলচাঁদ বিশ্বাস শয্যাশায়ি হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তার গোটা পরিবার।তার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, এগারো বছরের ছেলে, আট বছরের মেয়ে ও বৃদ্ধা বিধবা মা। ফুলচাঁদ বিশ্বাস (৪৭) এর বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুটিচন্দ্রখানা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মনমোহন বিশ্বাসের ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, তার বাবার রেখে যাওয়া মাত্র দুই শতাংশ জমিতে জরাজীর্ণ বাড়ীতে বসবাস করেন। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। তারপরও স্ত্রী, শিশুপুত্র, শিশুকন্যা ও বিধবা মাকে নিয়ে তার পাঁচ সদস্যের পরিবার। আর পরিবারের সকলের মুখে আহার যোগাতে সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতেন তিনি। নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করছেন নিজের পরিবারকে একটু ভালো রাখার। নিজের পরিবারকে কিভাবে ভালো রাখা যায় সারাক্ষণ সেই চিন্তাই করতেন তিনি। আর এই চিন্তাই কাল হয়েছে তার। শত দুশ্চিন্তায় প্রায় ২৫ দিন আগে হঠাৎই ব্রেন স্ট্রোক হয় তার। ফলে অবশ হয়ে গেছে ডান হাত ও ডান পা। কথাও বলতে পারেন না স্পষ্ট ভাবে। একসময় যার আয় রোজগারে সংসার চলতো সেই ফুলচাঁদই এখন সংসারের বোঝা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অসুস্থতার কারণেই মানবেতর জীবনযাপন করছে গোটা পরিবার। তবুও শত কষ্টের মাঝে অন্যদের কাছে ধার দেনা ও সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে কোনমতে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে তার পরিবার। ফুলচাঁদের সুচিকিৎসার জন্য আরও অনেক টাকার প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে ফুলচাঁদের সুচিকিৎসার জন্য সরকারি বেসরকারি সহায়তা অত্যন্ত জরুরি।
ফুলচাঁদের ছোট ভাই সুখচাঁদ বিশ্বাস বলেন, আমরা দুই ভাই সামান্য পুঁজি নিয়ে মাছের ব্যবসা করি। তাতে যা আয় রোজগার হয় তা দিয়ে কোনমতে দিন কাটে আমাদের। দাদা হঠাৎ করে অসুস্থ হওয়ায় দাদার চিকিৎসার খরচ যোগাতে আমাদের ব্যবসার মুলধন শেষ হয়ে গেছে। আমারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন টাকার অভাবে দাদার চিকিৎসা করতে পারছি না। অন্যদিকে আয় রোজগার না থাকায় দাদা,বৌদি, ভাইপো,ভাইজি, স্ত্রী, সন্তান ও বিধবা মাকে নিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমি সরকারি বেসরকারি সহায়তার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
এসময় তিনি সমাজের সহৃদয়বান সকলের নিকট ভাইয়ের সুচিকিৎসার ০১৭৮৩২০৯৪৩২ বিকাশ নাম্বারে সহায়তা প্রদানেরও আকুতি জানান।
ফুলচাঁদের অসুস্থতার কারণে গোটা পরিবারের মানবেতর জীবনযাপনের সত্যতা স্বীকার করে সদর ইউনিয়নের ৫ নংওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাখন চন্দ্র সেন বলেন, এই পরিবারটিকে সহায়তা করার জন্য আমি সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ফুলচাঁদ সুস্থ হলে এ পরিবারের এমন দুর্দশা থাকবে না। এখন তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরী। পরিবারের লোকজনের পক্ষে তার চিকিৎসার খরচ যোগান দেয়া অসম্ভব। ফুলচাঁদের সুচিকিৎসার জন্য সকলকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
+ There are no comments
Add yours