বিপুল মিয়া,ফুলবাড়ী প্রতিনিধি::
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চরা লসহ বিভিন্ন এলাকার চাষিরা সাধারণত রবি শস্যের উপর নির্ভরশীল।
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর সহ বিভিন্ন এলাকা গিয়ে দেখা গেছে, প্রান্তিক চাষিরা কোন জমি আর পতিত নেই বিস্তৃর্ণ কৃষকের মাঠে মাঠে দু-চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ।
যেন চারিদিকে বেগুনের সবুজ রঙে ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ আর মাঠ। নয়ন জুড়ানো দৃশ্য মেতে উঠেছে ফসলের মাঠে। এখন মাঠ জুড়ে সবুজ রঙে সাজিয়ে তুলিছে প্রকৃতির অপরুপ রুপ। চলতি মৌসুমে বেগুনের বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কোন কৃষক ঘরে বসে নেই।
প্রতিদিন সকাল হলেই প্রান্তিক কৃষকরা ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করাসহ বেগুন ক্ষেতে পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করেন। বেগুন চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। তাই গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে ব্যাপক হাওে চাষিরা বেগুন চাষ করছেন।
যে সব চাষির নিজস্ব জমি নেই তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে বেগুন চাষ সচ্ছল ভাবে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। অধিক লাভের আশায় এ অ লের কৃষকরা প্রতি বছরেই আগাম বেগুন চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। কৃষকরা বেগুন চাষের পাশপাশি সারা মৌসুমে বিভিন্ন ধরণের সবজির আগাম চাষ করে বদলে দিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাকা।
এ সব চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন এ অঞ্চলে শত শত কৃষক পরিবার। গত ১ থেকে দেড় মাস থেকে চাষিরা ক্ষেতের বেগুন ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২শ টাকা মন বিক্রি করছেন স্থানীয়সহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারদের কাছে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিমফুলমতি এলাকার বেগুন চাষি সত্যজিৎ চন্দ্র রায় ও চাঁন মিয়া জানান, প্রতি বছরে তারা নিজ উদ্যেগে আগাম বেগুন চাষ করেন। নিজের জমি না থাকায় সত্যজিৎ দেড় বিঘা মানুষের জমি লিজ নিয়ে বেগুন চাষ করেছে।
চাঁন মিয়া নিজের ২০ শতক জমিতে বেগন চাষ করেন। তাদের অভিযোগ তারা কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে বেগুন চাষ করছেন। অথচ এই চর অঞ্চলে তারা কোন দিন কৃষি কর্মকর্তার দেখা পায়নি।
এই দুই কৃষক না নিজের চিন্তা চেতনায় চর অঞ্চলে শতশত কৃষক বেগুনসহ বিভিন্ন ধরণের চাষাবাদ করে থাকেন। তারা আরও জানান, এ বছর বেগুনের দাম ভাল। তবে গত বছরের চেয়ে একটু ফলন কম। বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শ না পেয়ে স্থানীয় বাজারে কীটনাশকের দোকানদারের কাছ থেকে ঔষধ কিনে ক্ষেতে দিচ্ছি।তাতে রোগ সাড়ছে না বলে ক্ষোভ জানান।
একই এলাকার বেগুন চাষি রফিকুল ইসলাম ও শালমান শাহ জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেলে আমরা ক্ষুদ্র কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হতাম। এবছর বেগুনের দাম ভাল থাকায় এবছরও বেগুন চাষে লাভবান হবো। এক থেকে দেড় মাস ধরে ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করছি।
প্রথম দিকে ১ হাজার ৩শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা দরে বেগুনের মন বিক্রি করছি। এখন ১ হাজার টাকা মন বিক্রি করছি। আশা করছি আবহাওয়া অনুকুল থাকলে আরও দুই থেকে তিন মাস ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করতে পারবো।
কৃষক সত্যজিৎসহ অনেকেই জানান, এক বিঘা বেগুন চাষাবাদ করতে ১০ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ লাগে। বাম্পার ফলন ও দাম ভাল থাকলে এক বিঘা জমির বেগুন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়। তারা আরও জানান যাদের নিজস্ব জমি নেই।তারা প্রতি বিঘা তিন ভাগের এক ভাগ জমির মালিককে দিতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আসফিয়া শারমিন জানান, চাষিদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন সহযোগীতা দেওয়ায় এ অ লের কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি বেগুন চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এ অ লের মাটি বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১১০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা আগাম বেগুনের চাষাবাদ করেছে।
আবহাওয়া অনুকুল ও বেগুনের দাম ভাল থাকায় এবছরও কৃষকরা বেগুন চাষে লাভবান হবে বলে আমার বিশ্বাস। চরা লে সহকারী কৃষি কর্মকর্তার দেখা পায় না বলে একাধিক কৃষক জানিয়েছেন এমন প্রশ্ন করলে ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা জানান, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরলেন, কেন সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা চরা লে কৃষকদের খোঁজ খবর নেন না বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখতেছি।
+ There are no comments
Add yours