আজিজুল হক চৌধুরী ::
করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে অযৌক্তিকভাবে বর্ধিত জ্বালানী তেলের মূল্য ও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ (৬ নভেম্বর) শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে “করোনায় বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত জনগণের উপর বর্ধিত জ্বালানী তেলের মূল্য প্রত্যাহার ও ধর্মঘটের নামে পরিবহনে নৈরাজ্য বন্ধের দাবী” তে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবী জানান।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংকটে লকডাউনসহ নানা কারনে দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের আয় কমেছে। ফলে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
এহেন শংকটাপন্ন দেশের মানুষজন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই জ্বালানী তেলের দাম একলাফে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির কারনে মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, খাদ্যপণ্য ও কৃষিজ উৎপাদনসহ সামগ্রিক ব্যয় আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
পণ্য ও সেবামূল্য আরো একদফা বৃদ্ধির ফলে চরমভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। এতে নতুন করে আরো কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্রের ঝুঁকিতে পরার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম কম থাকায় সরকার উচ্চহারে তেল বিক্রি করে গত ৬ বছরে ধরে একচেটিয়া মুনাফা করেছে। এতে সরকার প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। মাত্র ৫ মাস ধরে জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির কারনে দেশের মানুষের এই কঠিন দুঃসময়ে একলাফে ২৩ শতাংশ তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে দাবী করেন তিনি।
করোনা শংকটাপন্ন জনগণকে প্রণোদনা দিয়ে সরকার যেখানে জনগণের পাশে থাকার কথা সেখানে জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে আরেক দফা শংকটে ঠেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
৬ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে জ্বালানী খাতে মূল্য না বাড়িয়েও ৬ হাজার কোটি টাকা বছরে ভুতর্কি দেওয়ার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে বলে দাবী করে তিনি অনতিবিলম্বে জ্বালানী তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে এহেন পরিবহন ধর্মঘটের নামে এহেন নৈরাজ্য বন্ধের দাবী জানান।
সংগঠনের উপদেষ্ঠামন্ডলীর সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, যে প্রক্রিয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে তা অবৈধ। জ্বালানীর দাম বাড়ানোর কোন ক্ষমতা জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের নেই।এটা করার ক্ষমতা বিইআরসির।
সেখানে শুনানীর পরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম। সরকার গায়ের জোরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের নেতা কর্মীদের বিরাট অংশের আয় বৃদ্ধিকে সাধারন মানুষের আয় বৃদ্ধি মনে করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।
+ There are no comments
Add yours