আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি >>
দুরারোগ্য ক্যাসার রোগে আক্রান্ত হয়ে বাম স্তন কেটে ফেলে দেয়া হয় খাদিজার, টাকার অভাবে ৭টি ক্যামো থেরাপির ১টি নিয়েছিলো ধার দেনা করে। বাকি ছয়টি ক্যামো থেরাপি নিতে পারছেন না টাকার অভাবে।
রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭টি এনজিও থেকে গত এক বছরে ঋণ নিয়েছিলেন, তাও পরিস্থিতি দেখে ঋণ দাতারা কিস্তির টাকা নিতে আসছেন না। বর্তমানে খাদিজা (৩৫) ঘরের বিছানায় বিনা চিকিতসায় অচল অবস্থায় ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন, দিন দিন মৃত্যুর দিকে যাচ্ছেন। খাদিজার চিকিতসার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন।
ঝালকাঠির রাজাপুরের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের পোদ্দারহাওলা নামক এলাকার মোঃ নান্নু খানের স্ত্রী খাদিজা বেগম (৩৫) দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় বিছানায় কাতরাচ্ছেন। খাদিজা বেগম মুঠোফোনে জানান, তাদের একমাত্র লিনা নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
তাকে বিবাহ দিয়েছে বাসের সুপার ভাইজারের কাছে। লিনার স্বামীর আর্থীক আবস্থা ভালো না থাকায় সে তার বাবার সংসারে থাকেন। নান্নু খানের ১২ শতাংশ বসত ভিটা ছাড়া অন্য কোন জমাজমি নাই।আয়ের অন্য কোন উৎসো নাই।
তাই তিনি গ্রামিণ, আশা, ব্যুরো, ইসলামিয়া, সংগ্রামসহ ৭টি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চালান, খাদিজার চিকিৎসা করান ও একটি অটো রিকসা কিনেন। গত ২০২০ সালের প্রথম দিকে খাদিজার বাম স্তনে ব্যাথা হতে থাকে।
না বুঝে সে ব্যাথা নিবারনের জন্য বিভিন্ন এনজিও’র কাছ থেকে ঋণ নিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একাধিক ডাক্তার বিভিন্ন হোমিওপ্যাথিকের ডাক্তার দেখান। ব্যাথা বেশী অনুভব হলে বরিশাল ইসলামিয়া ব্যাংক হাসপাতালে গেলে সেখানের ক্যান্সার রোগের অবিজ্ঞ ডাক্তার মনিরুল আহসান এক পর্যায় গত নভেম্বর মাসে অপারেশন করে খাদিজার বাম স্তন কেটে ফেলে দেন।
এর পরে ঔষধ খেতে থাকেন এবং টাকার অভাবে ক্যামো থেরাপি নিতে পারেননি। খাদিজা কিছুদিন ভালো থাকার পরে বাম হাতের গোড়ার নিচ থেকে একটি বড় ফোঁড়ার মতো হতে থাকে এবং সেই থেকে তার মেরু দন্ড ও মাঝায় ব্যাথা হয়। আস্তে আস্তে তার পা অবস হয়ে যায়।
এ অবস্থায় কিছু টাকা ধার দেনা করে গত সেপ্টেম্বর মাসে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. মোঃ মহাসিনের কাছে গেলে তিনি ৭টি কেমো থেরাপি নেয়ার পরামর্শ দেন। খাদিজা সেপ্টেম্বর মাসে একটি কেমো থেরাপি নিয়েছেন।
দ্বিতীয়টি নেয়ার তারিখ ছিলো গত অক্টোবর মাসের ২৫ তারিখ। টাকার অভাবে কেমো থেরাপি নিতে পারেননি। বাকি ছয়টি কেমো থেরাপি নিতে ও আনুসংগিক ঔষধ নিয়ে দুইলক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। বর্তমানে খাদিজা বসতে ও হাটতে পারেননা এবং মাথার চুল সব উঠে গেছে।
বিছানায় শুয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারতে হচ্ছে। খাদিজা অসহায় হয়ে সারাক্ষণ বিছানায় কেঁধে কাটাচ্ছেন। খাদিজাকে সেবা করার জন্য স্বামী নান্নু খান উপার্জনের জন্য কোথাও যেতে পারছেননা। তার পুরানো অটোরিক্সাটি একজনকে ভাড়া দিয়েছেন।
সেখান থেকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে পান। সেই টাকা দিয়ে ওই রিক্সার মেরামত ও কোন রকম অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে তাদের। তাই খাদিজা ও তার পরিবার তার চিকিৎসার জন্য দেশের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন।
অপরদিকে খাদিজার পরিবারে ঋণদাতা এনজিও গুলো তাদের বর্তমান বেহাল অবস্থা দেখে মানবিক কারনে ঋণের কিস্তি নিচ্ছেন না। খাদিজাকে সাহায্যের জন্য তাদের বিকাশ নাম্বার ০১৭২৬১২১৩৪০ দেয়া হলো।
+ There are no comments
Add yours