মোঃ জয়নাল আবেদীন,সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি >>
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অনস্বীকার্য।আজকের এই লাল সবুজের পতাকার পিছনের ইতিহাস এই ত্যাগী মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা রচিত হয়েছে।বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে।স্বাধীনতা যুদ্ধে রক্তক্ষয়ী ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
অত্যাচার,শোষণ, নিপীড়ন ও ধর্ষনের শিকার হন এদেশের নিরীহ মা বোনেরা।আর এসব জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল বাংলার সাধারণ মানুষ।দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহান স্বাধীনতার গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। গৌরবগাঁথা ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং সীতাকুণ্ডের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যাতে বিশ্ব স্বচক্ষে দেখতে পাই, সেই সুবাদে সীতাকুণ্ডে মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অর্থায়নে এই ভাস্কর্য নির্মাণে ২৩ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর এক হয়ে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধের ইতিহাস স্বরুপ স্মরণীয় করে রাখতে ভাস্কর্যের নির্মাণ করা হয়।প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।এসময় তারা সীতাকুণ্ডে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরেন।সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট দারোগার হাট হতে কুমিরা এলাকায় ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সম্মুখ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে।
স্থানীয় দেশপ্রেমিক ও জনসাধারণের সহযোগিতায় ওইদিন রাত দশটা থেকে পাক হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমণ পরিচালনা করে।সম্মুখ যুদ্ধটি ১২ হতে ১৬ ডিসেম্বর পরিচালিত হয়ে ১৭ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড হানাদার মুক্ত হয়।
সীতাকুণ্ডে বীরত্বপূর্ণ এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অর্ধশতাধিক সদস্য শহীদ হন।সীতাকুণ্ড সদরে চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মিত্রবাহিনীর অধিক শহীদ জওয়ানের মরদেহ দাহ করা হয়।
মুক্তিবাহিনী শহীদদের বর্তমান উপজেলা কমপ্লেক্সে এলাকায় দাফন করা হয়।স্বাধীনতার মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর আত্বত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র নামের এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধাম তীর্থের হনুমান মন্দিরের কাছে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।ভাস্কর্যের পিছনে স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মানচিত্র রয়েছে এবং সৌন্দর্যবর্ধক ফুলের বাগান রয়েছে।সেখানে ভাস্কর্যের সুরক্ষায় রয়েছে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।
+ There are no comments
Add yours