বিপুল মিয়া,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি >>
বুধবার মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বাবা। এদিকে সকালেই এইচ এস সি পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত বাবার লাশ বাড়িতে রেখে অশ্রুসজল চোখে পরীক্ষা দিলেন মেরাজ হক নামের এক শিক্ষার্থী।
পরীক্ষার অংশ নিতে গিয়ে মেরাজ এক হাতে চোখ মুছেছেন, অন্য হাতে কলম দিয়ে লিখছেন পরীক্ষার খাতায়। মাঝে মধ্যেই ফুঁপিয়ে কেঁদেও উঠেছেন।
বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সাইফুর রহমান সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
মেরাজ হকের বাড়ি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের হকটারী এলাকায়। তার বাবার নাম শরিফুল হক মিল্টন খন্দকার (৪৭)। তিনি বুধবার মধ্য রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান ।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার পরীক্ষা কেন্দ্রের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই তাদের অভিভাবককে নিয়ে আসেন। মেরাজ হক আসেন তার খালু পলাশ হোসেনকে নিয়ে। পরীক্ষার্থীর মেরাজের চোখে জল দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।
কেউ কেউ কান্নার কারণও জানতে চেয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পর ছড়িয়ে যায় মেরাজের বাবা মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠীরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে মেরাজ পরীক্ষার হলে গিয়ে বসেন।
মেরাজের সহপাঠী রবিউল ইসলাম জানান, মেরাজ হক পরীক্ষা দিতে গিয়ে বাবার শোকে পুরো সময়ই কেঁদেছে আর লিখেছে খাতায়। আর এ দৃশ্য দেখে তার সহপাঠী, শিক্ষকরা শোকাহত হয়েছেন।
মেরাজের খালু পলাশ হোসেন জানান , বধুবার রাত ১২টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মেরাজের বাবা বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। সদ্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদে অংশগ্রহণ করেন, কিন্তু দুঃখজনক নির্বাচনে পরাজিত হয়।
বাবাকে হারানোর পর ভেঙে পড়লেও কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষার হলে আসেন মেরাজ হক। আড়াইটার দিকে মেরাজের বাবার লাশ পারিবারিক ভাবে দাফন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সাইফুর রহমান সরকারি কলেজর অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মো.রফিকুল ইসলাম জানান, পরীক্ষার্থী মেরাজ হকের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা শুনেছি।
আমরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষা দিতে উৎসাহিত দিয়েছি। তবে তার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।
+ There are no comments
Add yours