রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি ::
কনকনে প্রচন্ড শীতে যখন কুয়াশা চাঁদরে ঢেকে আছে আবহমান বাংলার গ্রামীন জনপদ। তখন গভীর রাতে নতজানু শীতকে তোয়াক্কা না করে আওলাদে রাসূল এর নসিহত শুনতে সালানা জলসায় নবী প্রেমিকদের ঢল নেমে আসে পোমরা রাঙ্গুনিয়ার ছাইনীপাড়া মইনিয়া সাইফিয়া ইব্রাহামিয়ার মৌলনা হয়রত ইব্রাহীম শাহ (রাঃ) এর মাঠ প্রাঙ্গনে।
সোমবার ১৩ই ডিসেম্বর জুমাদুল আওয়াল মইনিয়া সাইফিয়া ইব্রাহীমিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানা উদ্যোগে সালানা জলসা এবং আজিমুশশান সুন্নি কানফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
ঐতিহাসিক ১ম আজিমুশান মিলাদ মাহফিলে রাঙ্গুনিয়া থেকে বিভিন্ন প্রান্তর এলাকার মানুষের সমাগম বাড়তে দেখা সালানা জলসা ও সুন্নি কানফারেন্সে।
প্রথম অধিবেশন ডাঃ শামসুল হুদা রুবেল ও ইমাম হোসেন হৃদয়ের যৌথ সঞ্চলনায় সকাল ৮টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের শুরু হলে সমাপ্ত হয় বিকেল ৩টায়।
এই সময় বার্ষিক ক্রীড়া ও শ্রেণীমেধাক্রম পাঠোউন্নতির পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। বাদে আছর শুরু হয় দ্বিতীয় অধিবেশন। তরিকত ও নসিহত এবং আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।
এই সময় সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক সুফী ঐক্য সংহতি (সুফীজ) এর চেয়ারম্যান রাহবারে শরীয়ত ও ত্বরিকত, পেশেয়ায়ে আহলে সুন্নাত, আলহাজ্ব শাহসুফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনি আল মাইজভান্ডারি(মাঃজিঃআঃ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আনজুমানে রহমানিয়া মঈনীয়া মাইজভান্ডারীয়া। তিনি বলেন-
গুজব হচ্ছে এক ধরনের জাহেলিয়াত। একটা দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য গুজবে যথেষ্ট। আমরা না বুঝে না জেনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো বেশি ছড়িয়ে দিচ্ছি, তাই আমি অনুরোধ করবো আপনারা জাহেলিয়াত কিংবা গুজবে বিশ্বাস করবেন না।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় অর্জন। কারণ যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ করে এদেশের নিরীহ মানুষদেরকে হত্যা করেছে, মা-বোনদের সম্ভ্রম কেঁড়ে নিয়েছে তাদের বিচার না হলে জাতি কখনো কলঙ্কমুক্ত হবে না। বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রভাবে দীর্ঘদিন যুদ্ধাপরাধীরা এ দেশের পবিত্র ভূমিতে অবাধে বিচরণ করেছে।
অবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুমুখী চাপ উপেক্ষা করে, ২০১০ সালে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল’ গঠন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য শুরু করেছেন। আমরা তার এ সাহসী পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। আমরা আশা রাখি স্বচ্ছতার সাথে এ ট্রাইবুনাল সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করবে।
এই দেশের মাটি ও মানুষের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ইসলাম ও সুফিজম। সুফিধারা বিশ্বাসের মধ্যে রয়েছে সম্প্রীতির বন্ধন। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ৫২ এর আন্দোলন, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, এবং বঙ্গীয় আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সুফীজম ছিল সবার আবিচ্ছেদ্য অংশ।
শান্তি, কল্যাণ, সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার জন্য মাইজভান্ডার দরবার শরীফে শুভ আবির্ভূত হয়েছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীতে থেকে মানবতার কল্যাণে দেশে-বিদেশে কাজ যাচ্ছে মাইজভান্ডার দরবার।
ইসলাম কখনো উগ্রবাদী, হঠকারিতা জুলুমবাজকে সমর্থন করে না। তাই আমরা আল্লাহ -রাসূল অলী প্রেমের ভক্তি ও সন্তুষ্ঠির মাধ্যমে রয়েছে শান্তির বিরাজ।
প্রধান বত্তা হিসাবে ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত রাঙ্গুনীয়া উপজেলার সভাপতি আল্লামা হাফেজ কারী সৈয়দ রুহুল আমিন আলকাদেরী।
প্রধান ওয়াজেন রাণিহাট হামিদিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক গাজী মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী,এই সময় স্বাগত বত্তব্য রাখেন- অত্র প্রতিষ্টাতার অধ্যক্ষ মাওলানা মোরশেদুল আলম মাইজভান্ডারি, রহমানিয়া মইনিয়া মন্জিল মাইজভান্ডার দরবার শরীফে খলিফা শাহ মুহাম্মদ রেজাউল করিম মাইজভান্ডারি, শাহ মাওলানা নঈম উদ্দিন নঈমী মাইজভান্ডারী, মাওলানা বখতিয়ার হোসেন মাইজভান্ডারী , মাওলানা হাফেজ ওয়াহিদুল মোস্তাফা (সাব্বির), মাওলানা সরোয়ার আলম, মাওলানা ইকবাল হোসেন, মাওলানা নাজের হোসেন মাইজভান্ডারী
উক্ত সুন্নি কনফারেন্সে সংবর্ধিত অতিথি ছিল-
সুখবিলাস ফিশারিজ এন্ড প্ল্যটেশন চেয়ারম্যান ও জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত মৎস্য খামারি জনাব আলহাজ্ব এরশাদ মাহমুদ সাহেব,সদ্য নবনির্বাচিত ৬ নং পোমরা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জহির আহম্মদ চৌধুরী পোমরা ৬ নং ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল কবির চৌধুরী গিয়াসু, পোমরা জামেউল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জনাব জসিম উদ্দীন মুন্সি, পোমরা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব মোসলেম উদ্দিন মাস্টার, বদিউল আলম মাস্টার, দিদারুল আলম, সাইফুল আলম প্রবাসী, সদ্য নির্বাচিত ইউপি সদস্য জনাব আবদুস সবুর, জনাব মুহাম্মদ ইব্রাহিম, এমরান হোসেন জাকারিয়া, আখরুজ্জমান আজাদ, ইউসুফ খান, জামাল উদ্দিন, আলমগীর সওদাগর,রাসেল চৌধুরী প্রমুখ।
+ There are no comments
Add yours