আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি >>
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ আরও এক নারী ও পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
বিষখালী নদীতে ষষ্ঠ দিনে বুধবার সকাল ৯টার দিকে অজ্ঞাত ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এবং রাজাপুর উপজেলার বিষখালী নদীতে বুধবার বেলা সারে ১১টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।এ নিয়ে এখন পর্যন্ত আগুনে পুড়ে যাওয়া ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিষখালী নদীর তীরে চরে একটি মরদেহ আটকে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুনে পোড়া যুবকের মরদেহ তুলে ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নিয়ে আসা হয়।
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া নারীর বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। তার পড়নে গোলাপি রঙ এর কামিজ ছিল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মরদেহটি সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এবং দুপুরে রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া এলাকায় বিষখালী নদীর তীরে যুবকের মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা দড়ি দিয়ে বেধে রেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুনে পোড়া যুবকের মরদেহ তুলে ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরও বলেন, উদ্ধার যুবকের বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। তার পড়নে কালো রঙের জিন্সের প্যান্ট এবং গোল গলার একটি গেঞ্জি ছিল। তার মানিব্যাগে একটি ছবি পাওয়া গেছে। তবে ছবিটি কার তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক সুরতহালের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।
এর আগে উদ্ধার অভিযানের পঞ্চম দিন মঙ্গলবার সকালে মমধ্যে বয়সী এক পুরুষের লাশ ও দুপুরে সুগন্ধা নদীর লঞ্চটার্মিনাল এলাকা থেকে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ আগুনে পুড়ে যায়।
অগ্নিকান্ডে সময় প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাপিয়ে পড়াদের খুঁজতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকর্মীরা সকাল থেকে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে সন্ধ্যান চালাচ্ছে। সুগন্ধ্যা নদীতে ভয়াবহ লঞ্চ দুর্ঘটনায় গত তিন দিনে চার জনের নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বরগুনার জেলা প্রশাসন থেকে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী এখনো নিখোঁজ আছেন ৩৩ জন।
এদিকে ঝালকাঠি যুব রেড ক্রিসেন্টের তালিকা অনুযায়ী নিখোঁজ রয়েছেন ৫১ জন। আর ঝালকাঠি জেলা পুলিশের তালিকায় নিখোঁজ আছেন ৪১ জন।
পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বলছে, লঞ্চটিতে অন্তত ৪০০ যাত্রী ছিল। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে দাবি, নৌযানটিতে যাত্রী ছিল ৮০০ থেকে এক হাজারের মতো।
+ There are no comments
Add yours