নিজস্ব প্রতিবেদক ::
বান্দরবানের লামায় রূপসীপাড়া ইউনিয়নে শশুর বাড়িতে বেড়াতে আসা জামাইকে গুলি করে হত্যা করেছে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারী ২১ইং) রাত ১টায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মংক্যচিং মার্মা (৩৫) রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলীর উপজেলার বাঙ্গালখালী এলাকার কাঁঠালছড়া পাড়ার মৃত মংছুরি মার্মার ছেলে। সে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড অংহ্লা পাড়ায় আথুইমং মার্মার (তার শশুর বাড়ি) বাড়িতে বেড়াতে আসলে এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লামার রূপসীপাড়া ক্যাম্পের একটি সেনা টিম ও লামা থানা পুলিশ।
হত্যার ঘটনাটি নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ঘটনা জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেরও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি।
নিহত মংক্যচিং মার্মার শ্যালক অংসিং মার্মা (২৮) বলেন, তার বড় বোনের স্বামী মংক্যচিং মার্মা গতকাল সোমবার রাত ৭টায় বেড়াতে আসে। রাত সাড়ে ১২টায় ৬ জন অস্ত্রধারী উপজাতি সন্ত্রাসী বাড়ি ঘিরে ফেলে।
সন্ত্রাসীরা ঘরের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার বোন জামাইকে গুলি করে হত্যা করে। সন্ত্রাসীরা তিন রাউন্ড গুলি করে মংক্যচিং মার্মার মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও রশি ছিল।
নিহতের স্ত্রী ম্রাবোচিং মার্মা (৩০) কান্না করতে করতে বলেন, গত শনিবারে সে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। তাকে নিয়ে যেতে সোমবার দিবাগত রাত ৭টায় তার স্বামী মংক্যচিং মার্মা এখানে আসেন।
মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারী) রাত ১টায় ৬ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে। তিনি আরো জানান, সন্ত্রাসীরা গুলি করার সময় বলে, ‘আমাদের টাকা না দিয়ে কেন চলে আসছিস’। তারা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, নিহত মংক্যচিং মার্মা রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালখালী এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ এমএলপি’র সক্রিয় সদস্য।
তাদের আভ্যন্তরিন কোন্দল ও চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ার জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। একটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিহত মংক্যচিং মার্মা এমএলপি’র সদস্য, এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
লামা উপজেলা জেএসএস সভাপতি অংহ্লা পাড়ার বাসিন্দা অংগ্য মার্মা বলেন, রাত ২টায় আমি ঘটনাটি জানতে পারি। খামার বাড়িটি আমাদের পাড়া থেকে ৫শত গজ পূর্ব দিকে। নিহত মংক্যচিং মার্মা আমার ভাগিনী জামাই। লোকালয়ে এসে এভাবে সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করার ঘটনাটি দুঃখজনক।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার সীতারঞ্জন বড়ুয়া বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যান ও লামা থানাকে অবহিত করি। কি কারণে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে আমরা জানিনা।
এদিকে লামা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।পুলিশ জানায়, লাশের গলায়, বাম কাঁদে ও পেটে খুব কাছ থেকে ভারী অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
+ There are no comments
Add yours