আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
শুক্রবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝালকাঠির নলছিটি সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ ফারহান-৭ এর ধাক্কায় এম.ভি বালুমতি নামের একটি বালি বোঝাই বাল্কহেড (বালিবাহী জাহাজ) ডুবে গেছে।
বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঝালকাঠি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রায় সাড়ে তিন’শ যাত্রী নিয়ে ঢাকাগামী লঞ্চ ফারহান-৭ সন্ধ্যা ৭টার দিকে নলছিটি লঞ্চঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর সুগন্ধা নদীর মল্লিকপুর এলাকায় ওই বাল্কহেডটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মুহূর্তেই বাল্কহেডটি ডুবে যায় এবং লঞ্চের সামনের কিছু অংশ ফেটে যায়। বাল্কহেডে থাকা ৫ জন স্টাফকে লঞ্চ থেকে বয়াফেলে ও ট্রলারে গিয়ে স্থানীয়রা উদ্ধার করে।
এসময় লঞ্চে থাকা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীদের তোপের মুখে লঞ্চটি সারদল এলাকায় চড়ে ভিড়িয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।
এসময় যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে দ্রুত লঞ্চ থেকে নেমে যায়।
ঘটনার পরপরই তুষখালী থেকে ঢাকাগামী পূবালী-৭ লঞ্চটি দুর্ঘটনাস্থলে এসে কিছু যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে অনেক যাত্রীই এ ঘটনার পর তাদের যাত্রা বিরতি করেন।
খবর পেয়ে নলছিটির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
লঞ্চযাত্রী সুমন, পান্না মনির সহ বেশ কয়েকজন এ প্রতিবেদককে বলেন, লঞ্চটি ধাক্কা লাগার পরেই যাত্রীরা ডাক চিৎকার শুরু করে। যাত্রীদের তোপের মুখে কর্তৃপক্ষ লঞ্চটি তীরে ভিড়িয়ে দেয়। আমরা নিরাপদে নেমেছি। অনেকে অন্য একটি লঞ্চে ঢাকা যাত্রা করেছে। আবার অনেকে বরিশাল থেকে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। কেউ কেউ আবার যাত্রাবিরতিও করেছেন।
ফারহান লঞ্চের পরিদর্শক মো. বাপ্পী জানান, লঞ্চটি নলছিটি ঘাট ছাড়ার পর কিছুদূর গেলে অন্ধকারের মধ্যে একটি বাল্কহেড নদীর মাঝখানে দেখা যায়। তাদের আলো দিয়ে ইশারা করা হয়। হর্ন বাজিয়ে সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু সরে না যাওয়ায় লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে লঞ্চের সামনে ফাটল ধরে পানি উঠতে শুরু করে। লঞ্চটি নিরাপদে সারদল এলাকায় তীরে ভিড়িয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। লঞ্চটি মেরামতের কাজ চলছে। বালু বোঝাই বাল্কহেডটি ডুবে গেছে। তবে তাদের সব স্টাফদের নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার বলেন, লঞ্চের যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। লঞ্চটির সামনের অংশে একটি ফাটল ধরেছে, তা মেরামত করা হচ্ছে।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, লঞ্চটি আপাতত মেরামত না করা পর্যন্ত সারদল এলাকায় সুগন্ধা নদীর তীরে থাকবে। এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
+ There are no comments
Add yours