খবর বাংলা ডেস্ক
দেশের সবচেয়ে বড় পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারীর কারণে প্রায় দুই বছর পর, সশরীরে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আর তা শুরু হচ্ছে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার ঘোষণায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বয়ে চলেছে আনন্দের বন্যা
এদিকে বিদ্যুতের দাম সাশ্রয়ী রাখতে এই কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি আরো জানান, আজই প্রধানমন্ত্রী দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন।
বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের ১৫ মে। একই বছরের ৮ ডিসেম্বর উৎপাদনে আসে সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিটও। এখানে আরো একটি ১৩২০ ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প চলমান রয়েছে। বিদ্যুতের দাম সাশ্রয়ী রাখতে এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হয়। তবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রবেশের প্রধান সড়কগুলো। পথে পথে টানানো হয়েছে নৌকার তোরণ। সিক্সলেন সড়কের প্রধান ফটকে নির্মাণ করা হয়েছে বর্ণিল গেট।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরের সড়কগুলোও সাজানো হয়েছে রঙ-বেরঙের পতাকা। এমনকি শেখ জামাল, শেখ কামাল ও শেখ রাসেল সেতু বর্ণিল আলোয় সজ্জিত করা হয়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভাও সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। পৌর শহরের খাসপুকুর থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত করা হয়েছে আলোকসজ্জা। পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সাঁটানো হয়েছে নানান ফেস্টুন। লাখ লাখ মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন উপভোগের জন্য।
মূলত বাংলাদেশে এটাই প্রথম নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করার নজির স্থাপন করেছে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয়ও প্রাক্কলিত পরিমাণের চেয়ে কম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ প্রকল্পের তালিকায় ছিল না। ওই তালিকায় থাকা দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপাল ও মাতারবাড়ী এখন পর্যন্ত উৎপাদনে আসতে পারেনি।
কিন্তু পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ৪৮ মাস চার বছর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এক মাস আগেই। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে উৎপাদনে আসা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সবচেয়ে বড়। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। ব্যয় হয়েছে ২৩০ কোটি ডলার (প্রায় ১৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা)। বাংলাদেশের ইতিহাসে কম সময়ে এত বড় অবকাঠামো নির্মাণ করার ঘটনা দেখা যায়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের এটি বড় সাফল্য।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ১৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন
+ There are no comments
Add yours