ইসলামের দৃষ্টিতে মেয়েদের পোশাক কেমন হওয়া দরকার।

Estimated read time 1 min read
Ad1

 

এম হেলাল উদ্দিন নিরব
সাংবাদিক ও সমাজকর্মী

 

১. নারীদের সতর হচ্ছে গায়ের মাহরাম বা যাদের সাথে বিয়ে জায়েজ আছে তাদের সামনে পুরোটাই হচ্ছে তাদের সতর। আর মাহরামদের সামনে মুসলিম সমাজে প্রচলিত যেই পোশাককে শালীন হিসেবে ধরা হয়ে সেটা (যেমন- সালোয়ার-কামিজ) সে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে সে তার মাহরামদের সামনে চুল, হাতের কিছুটা অংশ এইগুলো উন্মুক্ত রাখতে পারে, মোটকথা অশ্লীল কোনো কিছু না হলেই হলো।

২. নামাযে মুখ, হাতের কবজি উন্মুক্ত থাকতে হবে। তবে পর পুরুষ থাকলে মুখও ঢেকে রাখতে হবে।
৩. কাফের, ব্যভিচারী নায়িকাদের পোশাক, স্টাইল ফ্যাশান অনুকরণ করা সম্পূর্ণ হারাম।

৪. পুরুষদের শার্ট, গেঞ্জি, ফতুয়া,প্যান্ট –এইগুলো পড়া সম্পূর্ণ হারাম। ঘরে বাইরে সব জায়গাতেই হারাম।এমনকি স্বামী যদি শুধু তার জন্য পড়তে বলে তবুও হারাম,স্বামীর এই কথাটা মানা যাবেনা।বোরখার নিচে জিন্সের প্যান্ট যদিওবা পুরোটা ঢাকা থাকে, তবুও হারাম। আর আধা হিজাবি কিছু নারী থ্রি-কোয়ার্টার বোরখা (কোমরবা হাঁটু পর্যন্ত) পড়ে নিচে টাইট সালোয়ার/প্যন্ট আরো অন্যান্য নাম না জানা চরম মাত্রার আপত্তিকর টাইট পোশাক পড়ে।এরা চরম অজ্ঞ, ধোঁকাবাজ নারী, এদের দেখতে
ভালো লাগে দেখে ধোঁকায় পড়ে যাবেন না। লম্পট লোকদের চোখের জেনার দ্রব্য এই সমস্ত নারীদের জান্নাতে যাওয়া কঠিন বৈ সহজ হবেনা।এইগুলো আল্লাহর লানত পাওয়ার মতো কাজ।

৫. বোরখা হবে ঢিলেঢালা,আরামদায়ক কাপড় ও সাইজের, অবশ্যইট টাইট ও
নক্সাদার, জলমলে হবেনা, এইগুলো আরেক ফেতনা।বোরখা নারীদের সৌন্দর্যকে ঢাকার জন্য,সেটাই যদি আরেকটা সৌন্দর্যের উতস হয় তাহলে কি করে হবে?
৬. চেহারা পর পুরুষদের সামনে উন্মুক্ত রাখবেন না। অজ্ঞ বা অল্প শিক্ষিত দ্বায়ী অথবা আলেমদের ভুল ফাতওয়া গ্রহণ করে নিজের দ্বীনের বারোটা বাজাবেন না। চেহারাটাই হচ্ছে পুরুষদের জন্য মূল আকর্ষণ। সেইখানে চেহারা প্রকাশ করে গায়ে এক্সট্রা একটা কাপড় দিলে সেটা কতটা কার্যকরী হবে,ফেতনা এড়ানোর জন্য?

৭. সৌন্দর্যের জন্য হাতে পায়ে মেহেদী দিতে পারবেন,তবে পরপুরুষকে দেখানো যাবেনা।
৮. জরুরী প্রয়োজনের পর পুরুষের সাথে কথা বললে মিষ্টি ও নম্র ভাষায় কথা বলবেন না, এতে পুরুষের লাই পেয়ে যায় পরে ডিস্টার্ব করবে বা আপনাকে পথভ্রষ্ট করবে।

৯. ছবি তুলবেন না। আপনার বান্ধবী আপনার ছবি তার বয়ফ্রেন্ড /ছেলে বন্ধুদের দেখিয়ে বেড়াবে, মাঝখান থেকে আপনার গুনাহ হবে, ঐ ছেলদেরকে আপনার ফোন নাম্বার দিয়ে আপনাকে পটাতে বলবে। অনেক ক্ষেত্রে নারীরাই নারীদের বড় ক্ষতি করে, এর প্রমান আমি নিজে জানি।যত্রতত্র ছবি তুলে বেড়াবেন না,গায়ের মাহরামকে চেহারা দেখাবেন না। আর তাদের ব্যপারে কিইবা বলার আছে,যারা ফেইসবুকে ছবি পোস্ট করে নিজের মান-ইজ্জত পুরুষদের কাছে বিক্রি করে দেয় সামান্য ২-৪টা লাইক পাওয়ার লোভে। এইগুলো কি আসলে এতোই দামি যে এইগুলোর জন্য জাহান্নামেও যাওয়া যেতে পারে? (ওয়ালইয়াযু বিল্লাহ)

১০.রাস্তা ঘাটে বেহায়া বেপর্দা মেয়েদের মতো হৈচৈ করে পুরুষদেরকে উস্কে দেবেন না। আপনি একজন পুরুষের যৌন কামনার জন্য কারণ হলে তারজন্য আপনি দায়ী থাকবেন। বাহিরে স্বরকে এমন করবেন না যে পুরুষদের কামনার বস্তু হবে।একটা কথা মনে রাখবেন –নারীদের সব কিছু, সবকিছুই হচ্ছে “যিনাত”বা সৌন্দর্য, যা পুরুষদের মতো নয়। পুরুষদের চেহারা, শরীর, কন্ঠ কোনোকিছুই নারীদের মতো সুন্দর নয়, এইজন্যই নারীদের সৌন্দর্য ইসলামে মূল্যবান হিসেবে বিবেচিত। ঝিনুকের মাঝে যেমন মুক্তার মতো সম্পদ নিরাপদে লুকানো থাকে, ইসলাম নারীদেরকেও সেইরকম মূল্যবান হতে শিক্ষা দেয়। চরিত্রহীন বেহায়া মেয়েদের মতো পুরুষদের জন্য নিজেকে সস্তা অথবা ফ্রী করে দিতে নিষেধ করে।

১১. অনেকেই মনে করেন সাধারণ পোশাক পড়ে মাথায় একটা ওড়না দিলেই হিজাব- পর্দা হয়ে যাবে।জানা থাকা ভালো এটা তুর্কী (পথভ্রষ্টদের)
স্টাইল। নারীদের হিজাব পর্দার জন্য সাধারণ পোশাকের উপরে আলাদা বোরখা অথবা ঢিলেঢালা চাদড় দিয়ে শরীর আবৃত করতে হবে,বিশেষ করে ওড়না দিয়ে চেহারা ও বুকের উপরে ঝুলিয়ে দিতে হবে।

১২. ফতুয়া, গেঞ্জি বা টাইট সালোয়াড় পড়ে কিন্তু ওড়না না ব্যবহার
করে বুক উন্মুক্ত রেখে যেই সমস্ত নারী রাস্তায় নেমে পড়ে এরা আসলে রাস্তার মেয়ে। এদেরকে শয়তানের মতোই ঘৃণা করবেন।
১৩. নেটের কাপড়ের বা অত্যন্ত পাতলা কাপড় যা দিয়ে আলো- বাতাস যাওয়া আসে করে এমনভাবে যে শরীর দেখা যায়, এইসব ভুলেও পরবেন না –এইগুলো জাহান্নামী নারীদের পোশাক। এদের ব্যপারেই হাদীসে বলা হয়েছে, এরা কাপড় পড়েও উলংগ
নারী যারা জান্নাতের সুবাসটুকুও পাবেনা।

১৪. পারফিউম, সেন্ট মেখে বাইরে যাবেন না। যারা যাবে হাদীসে বলা হয়েছে, তাদেরকে ব্যভিচারি নারী হিসেবে লেখা হবে।
১৫. হিন্দুদের ধুতির স্টাইলে পায়জামা পড়বেন না,ফ্যাশানের কারণে জাহান্নামে যাবেন না।

১৬. কলেজ, ইউনিভার্সিটির অনুষ্ঠানে বা পিকনিক উপলক্ষ্যে শাড়ী পড়ে বের হবেন না,হিজাব পর্দাকে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন না।
(এটা আমি নিজেই দেখেছি, আর শুনলাম বর্তমানে এটা দুঃখজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে). মনে রাখবেন হিজাব পর্দাকে ছুঁড়ে ফেলে ২দিনের দুনিয়াকে ভোগ করতে গেলে,দুনিয়টাও একদিন আপনাকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। একটু খোজ নিয়ে দেখেন, যেই সমস্ত মানুষ এইগুলোতে লিপ্ত তাদের শেষ পরিণতি কি হয়েছে। ভার্সিটির শিক্ষক ছাত্রদেরকে উত্তেজিত করার দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হয়নি। নিজের ইজ্জত- আব্রু নিজে রক্ষা করবেন।

১৭. শাড়ি পড়লে অবশ্যই পেট পিঠসহ শরীর ঢাকা থাকতে হবে। স্বামী ছাড়া অন্য কারো সামনে না পড়াই ভালো। শাড়ি দিয়ে আমাদের দেশের নারীদের লজ্জা-শরম ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।নাউযুবিল্লাহ,তরুণী একটা মেয়েও পেট পিঠ বের করে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ে –কোনো লজ্জা-শরমের বালাই নাই।এখানে বেশিরভাগ পয়েন্টের ব্যপারে অনেক সহীহ হাদীস এসেছে এবং এইগুলোর ব্যপারে অত্যন্ত কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। আসলে বললে আরো অনেক অনেক বলা যাবে যে, সারাদিনেও শেষ হবেনা। আপনারা ইন শা’ আল্লাহ পড়াশোনা করে নিজেরাও কিছু জানার ও বোঝার চেষ্টা করবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours