ইউক্রেন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন প্রধানমন্ত্রী

Estimated read time 1 min read
Ad1

 

খবর বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেন প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে ভোটের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে সংসদে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাশিয়া মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমরা নিশ্চয়ই তাদের পাশে থাকবো।

ইউক্রেনে রুশ হামলার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে আনা প্রথম প্রস্তাবে বাংলাদেশ ভোট না দিলেও, ভোট দিয়েছে দ্বিতীয় প্রস্তাবে। বুধবার সংসদে এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করেন সংসদ নেত্রী। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু জানতে চেয়েছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে ভোটের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আসলে কী ছিল।

হাসিনা বলেন, এই যুদ্ধের পেছনে ‘উসকানি’ ছিল, সে কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যখন প্রস্তাব তোলা হলো, বাংলাদেশ তাতে ভোট দেয়নি। তবে দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ইউক্রেনের মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে হওয়ার বাংলাদেশ পক্ষে ভোট দিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়ার অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, বন্ধুপ্রতীম দেশ হওয়ায় শুধুমাত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রথম প্রস্তাবে বাংলাদেশ ভোট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দ্বিতীয় প্রস্তাবে মানবতার বিষয় থাকায় ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর মার্চ মাসের শুরুতে রাশিয়াকে আক্রমণ বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল ১৪১ দেশ, বাংলাদেশসহ ৩৫টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।

তবে গত ২৪ মার্চ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকটের অবসানে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ত্রাণ কার্যক্রমের সুযোগ দিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘে যখন প্রথম প্রস্তাবটা এলো আমরা দেখলাম, সেই প্রস্তাবটায় কোনো মানবাধিকারের কথা নেই, যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা নেই, সেখানে কোনো বিষয় নেই। একটা দেশের বিরুদ্ধে ভোট, সেটা হলো রাশিয়া। তখন আমি বলে দিলাম এখানে তো আমরা ভোট দেবো না। আর যুদ্ধ তো একা একা বাঁধে না। উস্কানি তো কেউ না কেউ দিচ্ছে। দিয়ে দিয়েই তো বাঁধালো যুদ্ধটা। সেখানে একটা দেশকে কনডেম করা হবে কেন?

সেই জন্য আমরা ভোটদানে বিরত ছিলাম। আর রাশিয়া হলো আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকা যখন সপ্তম নৌবহর পাঠায় পাকিস্তানের পক্ষে আর রাশিয়া তখন আমাদের পাশে দাঁড়ায়। কাজেই যারা দুঃসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমরা নিশ্চয়ই তাদের পাশে থাকবো। কিন্তু তারা যদি কোনো অন্যায় করে সেটা আমরা মানবো না, আর আমরা যুদ্ধ চাই না। কিন্তু যুদ্ধটা বাঁধালো কারা, উস্কানিটা কারা দিল, সেটাও আমরা দেখতে পাই। সেই জন্য আমরা তখন সিদ্ধান্ত দিলাম, একটা দেশের বিরুদ্ধে আমরা ভোট দেবো না।

দ্বিতীয় প্রস্তাব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় প্রস্তাব যেটা এলো সেটা হচ্ছে, ইউক্রেনে এই যুদ্ধের কারণে মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে, রিফিউজি হয়ে যাচ্ছে, ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই কষ্ট পাচ্ছে, সেখানে মানবতার বিষয়টা ছিল।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে যেহেতু মানবাধিকারের প্রশ্নটা আছে সেইখানে বাংলাদেশ ভোট দিয়েছে। আমার মনে হয়, এটা একেবারে স্পষ্ট যাতে আর কারো কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়। তবে আমাদের ওই যে একটা প্যাঁচানো গোষ্ঠী আছে, আপনি যাই বলেন, তাদের খাবার দিলে এভাবে খেতে পারে না, ওইভাবে ঘোরায়ে খায়। তাই তাদের কিছুই ভালো লাগবে না।

 

তাই এটা স্পষ্ট এই নিয়ে যারা প্রশ্ন করেছেন, লেখালেখি যেই করুক, যখন একটা দেশের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আমরা ভোট দেইনি। যখন মানবাধিকারে বিষয় আসছে, মানবতার বিষয়টা সামনে আসে আমরা ভোট দিয়েছি

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours