এম হেলাল উদ্দিন নিরব, পটিয়া-
চট্টগ্রাম পটিয়ায় অপহরণের পর হত্যা ও গুম হওয়া গাড়ি চালক মোসলেম উদ্দিনের লাশের সন্ধানে
ফের দুর্গম পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে চলা ৪ ঘন্টার এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন পিবিআইয়ের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিতষ।
দীর্ঘ ৪ ঘন্টা খোঁজার পর ও লাশের কোন সন্ধান না পাওয়ায় দিত্বীয় বারের মত নিষ্ফলা যায় এই অভিযান।
জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ ফেব্রæয়ারি রাতে পটিয়া থেকে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ পিকআপ চালক মোসলেমকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী অপহৃতের বড় ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পটিয়া থানা পুলিশ মামলার কোনো সুরাহা করতে না পারলে তদন্তভার পায় পিবিআই।
ওই হত্যা মামলার ১জন আসামীকে ২০২১ সালে এবং ২০২২ সালের শুরুর দিকে আরো ৪ জন সহ মোট ৫ আসামীকে আটক করে পিবিআই।
পরে তাদের নিয়েই পিবিআই লাশ উদ্ধারের অভিযানে নামে।
এ ঘটনায় আটককৃত আসামীরা হলেন, উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের হিলিচিয়া গ্রামের মো.সুমন, তাহের, হাইদগাঁও ইউণিয়নের মো. রহিম, বান্দরবান এলাকার রাম থং চঙ্গা (৩৫) ও কমলাছড়ি এলাকার পরিমল থং চঙ্গা (৪০)।
পিবিআইয়ের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিতষ বলেন,
‘চন্দনাইশের ধোপাছড়ি থেকে এই মামলার ২ আসামি, উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়ন থেকে দুই আসামী ও হাইদগাও গ্রাম থেকে আরো ১ আসামীকে পিবিআই গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যাকারীর সঙ্গে সরাসরি অংশ নেয়ার পাশাপাশি লাশ গুমের কথা স্বীকার করে।
এরপরই আমরা তাদের নিয়ে লাশ উদ্ধারের জন্য দুর্গম এই এলাকায় যায়।
অভিযানে কোন ফলাফল না পাওয়ায় ফের গুমের রহস্য উদঘাটন করে লাশ উদ্ধারের জন্য আমাদের অভিযান চলছে।’
তিনি জানান,
আটককৃত আসামীরা প্রত্যেকেই ১৬৪ এ জবানবন্ধী দিয়েছে। আসামীরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। খুব শীগ্রই মামলার নিষ্পত্তি করে সবার সামনে ট্রাক চালক মোসলেম উদ্দিনকে গুমের রহস্য উন্মোচন করা হবে। এদিকে, দুর্গম হওয়ার কারণে পুরো এলাকাটি পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের অপহরণ রাজ্য বলে দাবী স্থানীয়দের। গত কয়েক মাস আগেও এই এলাকা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এছাড়াও প্রতিনিয়ত ঘটছে অপহরণের ঘটনা। সর্বশেষ গত সপ্তাহে কেলিশহর ইউনিয়নের বোয়ালখালী সীমান্তবর্তী রতনপুর এপাকা থেকে ১৫ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা। মোসলেমের ভাই আবু তাহের জানান, ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রæপটি এই হত্যাকাÐ ঘটিয়েছে। তাঁর ভাই মোসলেম নামাজ দোয়া ছাড়া কখনো ভাত খেতেন না। পটিয়ার সীমান্তবর্তী হাইদগাঁও থেকে ২০ টির বেশি ছোট-বড় পাহাড়, ৪ টি বড় পাহাড়ি ঝিরি এবং গহীন বন পেরিয়ে পৌঁছাতে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের এ আস্তানায়। যে কারণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন কোনো নজরদারি নেই বললেই চলে।
+ There are no comments
Add yours