ফটিকছড়িতে অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজি

Estimated read time 1 min read
Ad1

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ফটিকছড়ি বিবিরহাট বাজারে ঘুরছে বিশালদেহী এক হাতি।

যে রাস্তা দিয়ে হাতি হেঁটে যায় ভয়ে সেখান দিয়ে যেতে পারছে না শিক্ষার্থী, মহিলা, ও শিশু পথচারীসহ কোনো যানবাহন।

হাতির পিঠে ভাব নিয়ে বসে আছেন মাহুত। আর সেই মাহুতের নির্দেশেই এক দোকান থেকে আরেক দোকানে যাচ্ছে হাতিটি।

এরপর শুঁড় সোজা এগিয়ে দিচ্ছে দোকানির কাছে। শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে না দেওয়া পর্যন্ত শুঁড় সরাচ্ছে না হাতিটি।

এভাবেই অভিনব কৌশলে হাতি দিয়ে চলছে নীরব চাঁদাবাজি। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল সকাল থেকে দুপুরে ফটিকছড়ি উপজেলার বিবিরহাট বাজার, নানুপুর বাজার, ও নাজিরহাট বাজারে দেখা যায় এ দৃশ্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাতি দিয়ে টাকা তুলছেন মাহুত। সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে শুরু করে দোকানের ধরন অনুযায়ী ২০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে চাঁদা।

শুধু দোকান নয়, চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি মহাসড়ক, বিবিরহাট থেকে গহিরা হেয়াঁখো রোড, হাতিরপুল থেকে আমান বাজার রোড,

ও ডাকবাংলো হয়ে ছৈল্লার দোকান সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন, সিএনজি, মোটর সাইকেল, জীপ, কার,

ট্রাক মাইক্রো ইত্যাদি গাড়ির পথ রোধ করেও টাকা তুলতে দেখা যায় এসব মাহুতের।

ফটিকছড়ি পৌরসভার কোর্ট এরিয়ার একটি চায়ের দোকানে হঠাৎ বিশাল দেহের একটি হাতি এসে শুঁড় এগিয়ে দিয়ে দাড়িয়ে থাকে সঙ্গে সঙ্গে চায়ের দোকানদার ২০ টাকা হাতিটির শুঁড়ে গুঁজে দিলেন।

এরপর হাঁতিটি তার দোকান ছেড়ে অন্য দোকানে গিয়ে দাড়ায়।

টাকা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই চা দোকানদার বলেন, ‘টাকা না দিলে তো যাবে না। এ ছাড়া দেরি হলে অনেক সময় দোকানের জিনিষপত্র ভাঙচুর করে।

এ জন্য ঝামেলা হওয়ার আগেই টাকা দিয়ে দিলাম।’ হাতির পিঠে বসে থাকা মাহুত বলেন, ‘হাতির ভরণপোষণের জন্য সবাই খুশি হয়ে কিছু টাকা দেয়।’

নিরীহ পশুকে ব্যবহার এটা আপনার এক ধরণের চাঁদাবাজি নয় কি?

কথাটা বলতেই মাহুত আক্ষেপের সুরে বলে উঠেন ভাই মানুষ খুশি মনে দু’চার টাকা একটা অবলা প্রাণীকে দিচ্ছে এটাকেও যদি আপনারা চাঁদাবাজি বলেন তাহলে এই বিশাল দেহের প্রাণীটিকে নিয়ে আমি কোথায় গিয়ে দাড়াব বলেন?

মানুষ তো এই অবলা প্রানীটিকে দেখেই টাকা দিচ্ছে।

এই প্রানীটির দিকে চেয়ে মানুষের দেওয়া ক্ষুদ্র সদকাটুকু দিয়ে আমি তার ভরণপোষনের ব্যবস্থা করি।

কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে তা আবার চাঁদাবাজি হয় কিভাব? পৌরসভার স্থানীয় বাসিন্দা ও হাতিরপুলের চা দোকানদার ফারুক সওদাগর বলেন,

‘হাতির কারণে অনেক সময় রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। দোকান থেকে চাঁদা উঠানো শেষ হলে হাতিগুলো রাস্তায় নামে।

মাহুত ইচ্ছে করেই হাতিগুলো চলন্ত গাড়ির সামনে থামিয়ে দেয়। হাতিকে টাকা না দেওয়া পর্যন্ত সে গাড়ির সামনে থেকে সড়েনা। আর এতেই প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়।’

চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি মহাসড়কের (পৌরসভা অংশের) এলাকার চা-দোকানদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান,

মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতি নিয়ে এসে বাজারের প্রায় দোকান থেকে চাঁদা আদায় করা হয়।

বিষয়টি দেখেও যেন দেখার কেউ নেই। প্রতিটি দোকান থেকে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হয়।

টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরানো হয় না। অনেক সময় শিশু ও মহিলা ক্রেতারা হাতি দেখে ভয় পান।

এতে তাদের ব্যবসায়ের ক্ষতি হচ্ছে।

এব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহেব বলেন, হাতি বা বন্যপ্রাণী ব্যবহার করে সড়কে চাঁদাবাজি করা উচিত নয়।

এ বিষয়ে এখনো আমাদের কেউ কিছু জানায়নি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours