এম আই রাফিঃ
চট্টগ্রাম শহরের পশ্চিম-বাকলিয়ায় অবস্থিত একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (পূর্ব নাম: বাকলিয়া সরকারি ল্যাবরেটরী উচ্চ বিদ্যালয়)।
বাকলিয়া থানার অন্তর্গত এই সরকারি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৭ সালে।
পূর্বে বিদ্যালয়টি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থাকলেও ২০০৯ সাল থেকে দ্বি-শাখায় (Double Shift) শিক্ষাক্রম চালু হওয়ায় বিদ্যালয়টিতে ছাত্রীরাও ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।
২০১৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী চট্টগ্রাম বোর্ডের শীর্ষ ২০টি স্কুলের মধ্যে এই স্কুল ১৯তম হয়।
২০১৭ সালের জিপিএ পাঁচের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বোর্ডের সেরা দশটি স্কুলের মধ্যে বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ৯ম তম স্থান দখল করে।
২০২১ সালের অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় ফলাফলের ভিত্তিতে বোর্ডের মধ্যে ৭ম স্থান দখল করে নেই।
প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার মান ধরে রাখলেও পরিবেশগত কারন ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সামান্য বৃষ্টিতে বা বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণে এই মাঠটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতির পূর্বে প্রতিষ্ঠান সংস্করণের নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
মাঠের পানি সঞ্চালনার জন্য টানেল কাজ সহ নতুন মসজিদ নির্মিত হয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।
তবে এখনো জলাবদ্ধতার সমস্যায় জর্জরিত “বাসউবি”।
ফলস্বরূপ, আগামী ১৯ জুন অনুষ্ঠিতব্য(বর্তমানে স্থগিত) এসএসসি পরীক্ষা-২০২২ এর পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ার সুযোগ হারিয়েছে বিদ্যালয়টি।
সরকারি স্কুল হয়েও এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র না হওয়ার পেছনে দায়ী অত্র স্কুলের জলাবদ্ধতা।
তথ্য সূত্রে, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় একই স্থপতি ও একই নির্মাণ পরিকল্পনায় নির্মিত হলেও অর্ধ-শতক পর দুই বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন।
এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ঘোষিত না হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং এর জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান,
“এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি বর্ষাকালে হওয়ার কারণে বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পরীক্ষা স্থগিতের ঝুঁকি এড়াতে এ বছর বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র না বসানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”
এছাড়া তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত পাঠানো হয়েছে।
বিদ্যালয় নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
বিদ্যালয়ের কাঠামোগত উন্নয়নের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি দরকার।
যথাযথ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন বিদ্যালয়ের সমসাময়িক সমস্যাগুলোর ব্যাপারে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিলে ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির গৌরব অক্ষুণ্ন থাকবে।
উল্লেখ্য যে, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থান স্থানীয়ভাবে দূর্বল। এর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে ও বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিদ্যালয়ের পক্ষ হতে স্মারক পত্র (১২১৫/২০২১ ও ১২০২/২০২২) জমা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে স্কুলের সামনে মাঠটিতে মাটি ভরাটের কাজ করা হয়। এবং মসজিদ ও নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়। সম্প্রতি দেশব্যাপী তীব্র বর্ষা ও বন্যা পরিস্থিতিতে নগরীর সকল সরকারি স্কুলের মধ্যে শুধুমাত্র বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ঘোষিত না হওয়ার পুনরায় আলোচনায় আসে বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতা।
+ There are no comments
Add yours