- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ
আজ তোমার ৭৩ তম জন্মদিন,
পুর্নতায় অভিজ্ঞতায় সফলতায়
বিশ্বের দরবারে অমলিন।
মুলনীতি তোমার গনতন্ত্র সমাজতন্ত্র
ধর্মনিরপেক্ষতা আর বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ,
তুমিই করেছ এ উপমহাদেশে গণরাজনীতির আবাদ,
শুভ তোমার জন্মদিন জানাই লাখো সাধুবাদ।।
ইতিহাস সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক মাত্রই জানে,
ঢাকার স্বামীবাগে ২৩ ও ২৪ জুন ১৯৪৯ সনে,
কাজি মোঃ বশির হুমায়ুনের বাসভবন রোজগার্ডেনে,
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আহবানে,
মাওলানা রাগীব আহসান সভাপতির আসনে,
অনুষ্ঠিত সভায় আওয়ামী মুসলিম লীগের
জন্ম দিল উপস্থিত সুধী জনে।
১৯৫৩ সালে সর্ব ধর্মের অনুসারীদের কল্যাণে,
মুসলিম বাদ দিয়ে যখন,
শুধুই আওয়ামীলীগ হল, স্বস্তি এল জনমনে।।
আজ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭৩ তম জন্মবার্ষিকী।২৩ জুন কেন বেছে নেয়া হল? এর পেছনের কারন, সম্ভবত ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশির প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতা বিলুপ্ত হয়েছিল বলেই তা পুনরুদ্ধারের প্রত্যয়ে জন্ম নেয়া দলটি আত্মপ্রকাশের জন্য এ দিনটি বেছে নিয়েছিল।
গনতন্ত্র,সামাজিক ন্যায়বিচার (সমাজতন্ত্র), ধর্মনিরপেক্ষতা, বাংগালী জাতীয়তাবাদ—- এ চার মুলনীতিতে গড়ে ওঠা এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা,জনগনের ক্ষমতায়ন, স্বনির্ভর আত্মমর্যাদাশীল জাতি ও দেশ গঠনকে লক্ষ্য করে এগিয়ে যাওয়া– এই দলের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে । পলাশীর আম্রকাননে হৃত স্বাধীনতা ২১৪ বছর পর ১৯৭১ সালে মেহের পুরের বৈদ্যনাথ তলার আরেক আম্রকাননে পুনরুদ্ধার করে আনে এ দলই।
স্মরন করি, শ্রদ্ধা নিবেদন করি তাঁদের যারা এ দলের জন্মলগ্নে জড়িত ছিলেন।হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মৌলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী,একে ফজলুল হক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব,শামসুল হক, শওকত আলী,আতাউর রহমান খান,আবদুস সালাম খান,মৌলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ,ইয়ার মোহাম্মদ খান,আলী আহমদ খান,আলী আমজাদ খান,শাখাওয়াত হোসেন,একে এম,
রফিকুল ইসলাম,খয়রাত হোসেন,তাজউদ্দীন আহমদ, আনোয়ারা খাতুন,সৈয়দ নজরুল ইসলাম,ক্যাপঃ,মনসুর আলী,কামরুজ্জামান,কফিল উদ্দিন,জব্বর খদ্দর,অলি আহাদ,কামরুদ্দিন,আবুল হাশেম সহ আরো অনেক -যাদের কেউ আর এখন বেঁচে নেই আমাদের মাঝে,কিন্তু সৃষ্ট প্রিয় সংগঠন বেঁচে আছে তাঁদের আদর্শ বুকে ধারন করে।
অহিংস অসহযোগ আন্দোলন আর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অভূতপূর্ব সমন্বয়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। এই দুই রাজনৈতিক কৌশলের সমন্বয়, মিশ্রণ ও বিজয় অর্জন পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা যা সম্ভব করেছে গণমানুষের দল– আওয়ামী লীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংগঠনের নিবেদিত বিশাল কর্মীবাহিনীর দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগই এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছে।
৭৩ বছরের এই সংগঠন সঠিক নেতৃত্ব ও ত্যাগী কর্মীবাহিনী এবং জনসমর্থন পেয়েছে বলেই গৌরবের সঙ্গে শত ষড়যন্ত্র, বাধা অতিক্রম করে বিজয় অর্জন করেছে, স্বাধীনতা এনেছে দুনিয়ার গণবিপ্লবের ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আগামীতেও বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে, বাঙালী জাতি উন্নত জাতি হিসেবে এগিয়ে যাবে এ দলের হাত ধরে এ প্রত্যাশা আজীবন রাখি মনে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লক্ষ লক্ষ আদর্শবান ত্যাগী কর্মীদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই,জানাই হৃদয় গহনের অকৃত্রিম ভালবাসা। । অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে, মেধা,শ্রম,রক্ত,জীবনের বিনিময়ে, বর্ণনাতীত ত্যাগ-তিতীক্ষার মধ্য দিয়ে আজকের বাংলাদেশ যা কিছু অর্জন করেছে তা কেবল সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ ত্যাগী কর্মীদের দ্বারাই, সুসংগঠিত এই সংগঠনের মাধ্যমেই। তাঁদের প্রতি জানাই আমার সংগ্রামী সালাম,মুজিবীয় শুভেচ্ছা বিপ্লবী স্যালুট। বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা সমুন্নত করে রাখার দায়িত্ব আমাদের। লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে আমরাই পেরেছি বিশ্বরেকর্ড গড়তে। বিশ্বাস করি,আওয়ামী লীগই পারবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ করতে,স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে।
প্রিয় সংগঠন আওয়ামীলীগের ৭৩ তম জন্মদিনে কোটি নেতাকর্মীর প্রতি আজকে আমার অনুরোধ শুধু একটাই –দলের বিশুদ্ধতা নেতাকর্মীদের আদর্শের প্রতি অবিচলতা এবং নৈতিক শুদ্ধতা ধরে রাখতে হবে।দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে যে দল শক্তিশালী না হয়ে দুর্বলও হতে পারে তার কারন খতিয়ে দেথতে হবে।পার্শ্ববর্তী ভারতের সম আদর্শিক এবং ভ্রাতৃপ্রতিম প্রবীন গণ সংগঠন কংগ্রেসের ভরাডুবি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।আওয়ামীলীগে যাতে কোন অনুপ্রবেশকারী হাইব্রীড, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ স্থান না পায় এবং ছাত্রলীগসহ অন্যান্য অংগ ও সহযোগী সংগঠন না করে কেউ যাতে আওয়ামীলীগের কোন স্তরের নেতা হতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারী রাখতে হবে।তাহলেই দলের বিশুদ্ধতা রক্ষা পাবে। দল যাতে কোন অবস্থাতেই জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন না হয় সে কর্ম প্রচেষ্টা সদা জাগ্রত রাখতে হবে প্রতিটি নেতাকর্মীর অন্তরে। মনে রাখতে হবে,বঙ্গবন্ধুর পরে সর্বাধিক করিৎকর্মা, যোগ্য সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এবং আওয়ামীলীগের নবযাত্রা অগ্রযাত্রা এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।যোগ্য নেতার হাতে যখন দল আর দেশ,পথ হারাবেনা নিশ্চিত বাংলাদেশ। বাংলাদেশ চিরজীবি হোক, আওয়ামীলীগ চিরজীবি হোক,শতায়ু কামনা করি জননেত্রী শেখ হাসিনার।।
জয়বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু,জয় শেখ হাসিনা।।
লেখক
এডভোকেট শফিউল আজম, রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী
+ There are no comments
Add yours