ইউনুস আলী, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা’র বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রাণীমূলক মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবারের লোকজন।
শুক্রবার (০১ জুলাই) দুপুরে প্রেসক্লাব উলিপুর হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চেয়ারম্যানের স্ত্রী গোলেনুর বেগম।
এসময় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই আতাউর রহমান আতা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরাজিত প্রার্থীরা তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ জুনের একটি ঘটনাকে উল্লেখ করে ১৮দিন পর গত ২৭জুন পরিবারের স্বজনদের সাক্ষি করে গৃহবধূ মোহনা আক্তার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি সাজানো ধর্ষণচেষ্টা মামলা উলিপুর থানায় দায়ের করেন। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে পরাজিত প্রার্থীদের যোগসাজসে এই হয়রানীমূলক মামলাটি পুলিশ তদন্ত ছাড়াই নথিভূক্ত করে। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবী জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের স্ত্রী গোলেনুর বেগম আরো জানান, মামলার বাদী মোহনা আক্তার ঘটনার দিন (৯ জুন) স্বামী সন্তানসহ আমাদের বাড়ীতে আসেন জনশুমারিতে নাম অন্তর্ভূক্ত করার জন্য।
সেদিন সকালে আমি তাদেরকে খাবার পরিবেশন করি। এরপর তারা জনশুমারির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেতরাই বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে যান।
এর ১৮দিন পর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়।
সাক্ষি করেন তার আপন ভাসুর ফিরোজ আলম ও তার আপন মামা শ্বশুর লিয়াকত আলীকে।
যারা ওই দিন আমাদের বাড়িতেই আসেনি।
আরো দুঃখজনক ঘটনা হল মামলাটি উলিপুর থানা পুলিশ তদন্ত ছাড়াই নথিভুক্ত করেন। যা আমাদের জন্য হতাশাব্যঞ্জক।
এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, বাদী মোহনা আক্তারের স্বামী ফেরদৌস একজন মাদক সেবনকারী ও মাদক কারবারী।
এর আগে মাদকসহ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে তার ছয় মাসের জেল হয়।
অপরদিকে মোহনা আক্তার চলতি বছরের মার্চ মাসে কিশোর-কিশোরীদের ভাতার কথা বলে ৪৬ জনের কাছ থেকে অবৈধভাবে প্রায় লক্ষাধিক টাকা গ্রহণ করে।
পাশাপাশি প্রতিবেশী বেবী আক্তারের কাছ থেকে মোহনা আক্তার দেড়লক্ষ টাকা হাওলাত নেন।
বিনিময়ে ইমিটেশনের গহনা বন্ধক দিয়ে তাকে ঠকানোর চেষ্টা করেন। এনিয়ে উলিপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে মোহনা আক্তারের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, ধর্ষণচেষ্টার পর আমি জনশুমারির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেতরাই বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে যাই।
সেখানে ৪দিন প্রশিক্ষণ গ্রহন করি।
পরে সালিশ বৈঠকের কারণে মামলা করতে ১৮দিন সময় লাগে। ফলে বিলম্ন হয়।
কিশোর-কিশোরীদের ভাতা দেয়ার নামে অর্থ গ্রহনের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান আমি ২০জনের কাছ থেকে ২০ হাজার নিয়েছিলাম। যা ফেরত দিয়েছি।
এছাড়াও তার স্বামীর মাদক মামলায় ৩মাসের কারাভোগের কথা স্বীকার করেন তিনি।
বেবী আক্তারের অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, আমি দেড় লাখ টাকা হাওলাত নিয়েছিলাম।
থানায় অভিযোগ দেয়ার পর একলাখ টাকা ফেরত দিয়েছি। আর ৫০ হাজার টাকা তিনি পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে-
এলাকার উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তি আব্দুল বাতেন, মিজানুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ জানান, বাদীর পরিবারটি অন্যের দ্বারা প্ররোচীত হয়ে মামলাটি করে থাকতে পারে।
কারণ তার স্বামী একজন মাদকাশক্ত এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের স্ত্রী গোলেনুর বেগম, ভাতিজি জেসমিন আক্তার, ফুফু শাহনাজ পারভীনসহ ওই ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
+ There are no comments
Add yours