নুরুল আবছার নূরী
ফটিকছড়িতে হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রুজিনা আক্তার ( ২৬) নামে এক গৃহবধু পঙ্গু হতে বসেছে।
পঙ্গু হওয়া ঐ গৃহবধু উপজেলার ভুজপুর থানার বাগানবাজার ইউনিয়নের হলুদিয়া এলাকার দিনমজুর আব্দুল কাদেরের স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্বা আবু তাহেরের মেয়ে।
জানা গেছে, গত ৩ জুলাই গৃহবধু রুজিনা আক্তারের গায়ে জ্বর ও ব্যাথা অনুভব হলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক এম.এ জাহাঙ্গীরকে ঘরে ডেকে আনা হয়।
ডা জাহাঙ্গীর গিয়ে রুজিনার মাজায় এক সাথে চারটি ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর থেকে তার দুই হাটু ফুলে গিয়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হতে থাকে।
পরবর্তীতে অবস্থা বেগতিক হওয়ায় রুজিনাকে পার্শ্ববর্তী রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিযে যাওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেলে ৯ দিন চিকিৎসা দেয়া হলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। আজ ১৬ জুলাই সকালে বাপের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই পা অচল হয়ে রুজিনা তার বিছানায় কাতরাচ্ছে। এ বিষয়ে রুজিনার ছোট ভাই মাহবুবুল আলম বলেন, বোনের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে ঘরে ডেকে আনা হয়েছিল। তিনি এসে এক মিনিটের মধ্যে বোনের শরীরে চারটি ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর আমার বোনের হাটু দু’টি প্রচণ্ড ভাবে ফুলে গিয়ে ব্যথা আরো বেড়ে যায়। এ মতাবস্তায় চিকিৎসক জাহাঙ্গীর দ্রুত সটকে পড়ে। আমরা উপায়ন্তর না দেখে পার্শ্ববর্তী রামগড় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে থেকে ডাক্তাররা উন্নত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে আমার বোন পঙ্গু হয়ে বিছানায় ছটফট করছে। আমার বোনের এখনো অল্প বয়স। এ বয়সে তাকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে। মাহবুব অভিযোগ করে বলেন, এ ব্যাপারে আমি প্রথমে স্থানীয় আঁধার মানিক বাজার কমিটি ও ইউপি চেয়ারম্যানকে বিচার দিয়েছি।
তারা এর কোনো বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ভূজপুর থানা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর বলেন-
আমি তাদের পরিবারের পীড়াপীড়ির কারণের ইনজেকশন দিয়েছি। পুশ করা ইনজেকশনের সবগুলো হাই এন্টিবায়োটিক ছিলনা।
ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীন ফারুকী বলেন, বাগান বাজার এলাকা হতে হাতুরে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সময় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির রাহমান সানি বলেন, বাগানবাজার ইউনিয়নে কথিত পল্লী ডাক্তারের ভূল চিকিৎসায় রোগী পঙ্গু হওয়ার একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে।
বাগান বাজারসহ পুরো উপজেলায় ডাক্তার সেজে যারা অপচিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
+ There are no comments
Add yours