চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, মানুষ ও যানবাহন চলাচলের পথে কোন ধরণের প্রতিবন্ধকতা ও অবৈধ স্থাপনা থাকতে পারবে না। এসব অবৈধ স্থাপনা অতি দ্রুত নিজ নিজ উদ্যোগে সরিয়ে ফেলা না হলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।
শনিবার দামপাড়া স্টোর থেকে শুরু করে আগ্রাবাদ জাম্বুরী মাঠ দেওয়ানহাট ডিটি রোড, দক্ষিণ পাহাড়তলী জোড়া ঢেবা হয়ে সাগরিকা মোড় পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন প্রশাসক।
এসময় প্রশাসক আগ্রাবাদস্থ জাম্বুরী মাঠ সংলগ্ন সিটি কর্পোরেশনের জায়গাটিকে জঞ্জাল মুক্ত করে সেখানে অকেজো ও পরিত্যক্ত যানবাহনের ডাম্পিং সেন্টারে পরিণত করা এবং অকেজো যানবাহনগুলো নিলামে বিক্রিরও নির্দেশ দেন।
জাম্বুরী মাঠ ও কর্ণফুলী শিশুপার্কের আশেপাশে সকল অবৈধ স্থাপনা এবং ফুটপাতের উপর দোকান-পাটের বর্ধিত অংশ তৎক্ষণাৎ উচ্ছেদ করারও নির্দেশ দেন। এছাড়া শিশু পার্কের ভেতরে অবস্থিত লেক সিটি রেস্টুরেন্টটিকে কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করে বিয়েসহ কোন ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে তিনি ঘোষণা দেন।
শিশু পার্কের ভেতরে অভ্যন্তরীন চলাচল পথে ভাঙ্গা ও যত্রতত্রভাবে ময়লা আবর্জনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সেখানে স্বাস্থ্যবান্ধব পরিবেশ রক্ষায় সৌন্দর্য্যবন্ধন ও পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন পার্ক বন্ধ রেখে বেলা দু’টার পর পার্ক খোলা এবং পার্কের আশেপাশে গড়ে উঠা অবৈধ দোকান-পাঠ ও স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ প্রশাসক। অন্যথায় ইজারা বাতিল করা হবে বলে সর্তক করে দেন। তিনি পার্কটিকে নান্দনিক ছোঁয়ায় শিশুদের মনন বিকাশের উপযোগী করে গড়ার নির্দেশনা দেন।
তাছাড়া দক্ষিণ পাহাড়তলী জোড় ঢেবা পাড় সংলগ্ন চারপাশ এলাকা দখলদার মুক্ত ও মাদক কেনা-বেচার আখড়া উচ্ছেদ করে সেখানে নান্দনিক বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান চসিক প্রশাসক। এই জোড় ঢেবায় চাষ করা মাছের জন্য ক্যামিক্যাল যুক্ত কোন খাবার না দিতে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানকে সর্তক করে দিয়ে বলেন, এতে জোড়া ঢেবার পানি দূষনের কবলে পড়বে। তিনি দক্ষিণ পাহাড়াতলীবাসীকে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সন্তানরা যাতে বিপথগামী না হয় সেজন্য অভিভাবকদের সর্তক হতে হবে এবং করোনাকালে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের শুদ্ধচারী জীবনাচারণ হবে সংকট থেকে পরিত্রানের একমাত্র পথ। চসিক প্রশাসক সেখানে উপস্থিত ছেলেমেয়েদের মাঝে চকলেট বিতরণ করেন।
এরপর তিনি দেওয়ানহাট থেকে সাগরিকা পর্যন্ত ডিটি রোডের খানা-খন্দ ভরাট সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় প্রকৌশলীবৃন্দ চসিক প্রশাসককে অবগত করেন যে বৃষ্টি বাঁধা না সাধলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সড়কটি ৪ ইঞ্চি ঢালাইয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। তিনি প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারবৃন্দকে কাজের গুণগত মান যাচাইয়ের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় তিনি বলেন এ সড়কটিও চট্টগ্রামের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বন্দর নগরীর অভ্যন্তরীন যোগাযাগসহ সারা বাংলাদেশের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সড়কের দু’পাশের অবৈধ স্থাপনা, বিশেষ করে রড-সিমেন্ট, ফার্নিচার-ওয়ার্কসপসহ নানাবিধ দোকানপাটের সামগ্রী দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে এসব স্থাপনা দ্রুত সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। তিনি উপস্থিত এলাকাবাসীকে সড়কের নির্মাণকাজের তদারকি করারও আহ্বান জানান।
এরপর চসিক প্রশাসক সাগরিকা থেকে এ. কে. খাঁন মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের ফুটপাত অবৈধ দখল থাকতে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি দখলদারদের এসব ফুটপাতের দখল আজকের মধ্যেই স্বউদ্যোগে ছেড়ে দেওয়ার আহবান জানান। নচেৎ আগামীকাল সিটি কর্পোরেশন পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতায় এসব অবৈধ দোকান এবং স্থাপনা উচ্ছেদ করবেন বলে ঘোষণা করেন।
এ সময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামসুদ্দোহা, সচিব মোহাম্মদ আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লে.কর্ণেল সোহেল আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, আবু ছালেহ, মনিরুল হুদা, সুদীপ বসাক, ঝুলন কান্তি দাশ, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, বিপ্লব দাশ, এস্টেট অফিসার কামরুল ইসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
+ There are no comments
Add yours