মুসলিম বিয়েতে দেনমোহরের বিপরীতে কাজিরা (ম্যারেজ রেজিস্ট্রার) যে টাকা আদায় করেন তার একটা অংশ সরকারি কোষাগারে জমাসহ এ খাতে লেনদেন ডিজিটাল করতে সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
গত ৫ এপ্রিল বিলটি সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে তা পরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিয়ে ও তালাক নিবন্ধনে আলাদা দুই ধরনের খাতা রেখে কাজির বাড়তি ফি আদায় ঠেকাতে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন পার্বত্য এলাকা ছাড়া সারা দেশে ২০ লাখ ২০ হাজার ৭৪৯টি বিয়ে হয়েছে। এসব বিয়েতে দেনমোহরের পরিমাণ ৯০ হাজার ৯৪০ কোটি ৬৯ লাখ ৬ হাজার ৩৫১ টাকা। এর বিপরীতে কাজিরা আদায় করেন এক হাজার ৫৬২ কোটি আট লাখ ৩৩ হাজার ৯৮৭ টাকা। আর সরকারি কোষাগারে জমা পড়ে মাত্র সাত কোটি ৮৫ হাজার ৪৫৮ টাকা।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এ বলা আছে, একজন নিকাহ নিবন্ধক (কাজি) চার লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার টাকার জন্য সাড়ে ১২ টাকা ফি নিতে পারবেন। দেনমোহর চার লাখের বেশি হলে এর পর থেকে প্রতি এক লাখ বা অংশ বিশেষের জন্য ১০০ টাকা নিবন্ধন ফি নিতে পারবেন। তবে সর্বনিম্ন ফি হবে ২০০ টাকা। তালাক নিবন্ধনের ফি ৫০০ টাকা। একজন নিবন্ধক বছরে সরকারি কোষাগারে ১০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি এবং নবায়নের জন্য পাঁচ হাজার টাকা জমা দেন।
কমিটির সদস্য জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, এই যে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় হচ্ছে, এখানে সরকারি কোষাগারে যাচ্ছে খুব অল্প টাকা। কাজিদের আদায় করা টাকার একটা অংশ যাতে সরকারি কোষাগারে যেতে পারে, সেজন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এখানে বিধিমালা পরিবর্তনের বিষয় আছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতির বিষয় আছে। আইন মন্ত্রণালয় বিষয়গুলো দেখবে।
কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. শামসুল হক টুকু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, সেলিম আলতাফ জর্জ ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশ নেন।
+ There are no comments
Add yours