বিশ্বের বহু দেশে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রামক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স। আক্রান্তের হারও বাড়ছে ব্যাপকভাবে।
এই পরিস্থিতিতে মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবকে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই কথা ঘোষণা করেন। এই পদক্ষেপের ফলে মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অতিরিক্ত তহবিল এবং সরঞ্জাম ব্যবহারের পথ উন্মুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে।দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের বেশিরভাগই পুরুষ এবং এসব পুরুষ অন্য পুরুষদের সঙ্গে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রী জেভিয়ার বেসেররা বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সংক্রামক এই ভাইরাস মোকাবিলায় আমরা আমাদের পদক্ষেপ পরবর্তী স্তরে নিতে প্রস্তুত, এবং মাঙ্কিপক্সকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার জন্য আমরা সকল আমেরিকান নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মার্কিন সরকার গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশজুড়ে ১ লাখ ৫৬ হাজার মাঙ্কিপক্স ভ্যাকসিনের ডোজ বিতরণ করেছে। ভ্যাকসিন নির্মাতা বাভারিয়ান নর্ডিক-এর কাছে আরও ২৫ লাখ ডোজ টিকার চাহিদার কথা জানিয়েছে বাইডেন সরকার।
এর আগে সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে গত জুলাই মাসের শেষের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মাঙ্কিপক্সকে গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি বা বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসাবে ঘোষণা করে।
২৭ জুলাই ডব্লিউএইচও’র প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস সাংবাদিকদের বলেন, মাঙ্কিপক্সের এই প্রাদুর্ভাব কমানো যায়। তবে সবচেয়ে ভাল পন্থা হল ঝুঁকির রাস্তা থেকে সরে আসা।
তিনি বলেন, এই বার্তা সেইসব পুরুষদের জন্য ‘যারা পুরুষসঙ্গীদের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হন।’ এক্ষেত্রে ‘নিজের জন্য ও অপরের জন্য নিরাপত্তা রাখা ও নিজের সেক্স পার্টনারের সংখ্যা কমানো’ প্রয়োজন।
ডব্লিউএইচও’র প্রধান আরও বলেন, ‘যদি আমরা যৌনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আর একটু সংযমী ও সচেতন হই, সেক্ষেত্রে এই রোগের ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব। এই রোগ থেকে আত্মরক্ষা অনেকটাই নির্ভর করছে নিজের ওপর।’
উল্লেখ্য, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসজনিত অসুখ। স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণির একটি ভাইরাস এ রোগের জন্য দায়ী। ভাইরাসটির দু’টি রূপান্তরিত ধরন রয়েছে— মধ্য আফ্রিকান ও পশ্চিম আফ্রিকান।
মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো সাধারণত জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, ঠান্ডা লাগা এবং ক্লান্তি থেকে শুরু হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং সংক্রমণের পাঁচ থেকে ২১ দিনের মধ্যে যেকোনো জায়গায় উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
+ There are no comments
Add yours