করোনাভাইরাস মহামারি আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিপর্যস্ত চলমান এই সংকটে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নজিরবিহীন পরিস্থিতির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
ভয়াবহ এই সংকটে বিশ্বের প্রথম হিসেবে একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। এই তালিকায় দ্বিতীয় দেশ হিসেবে অনেকে পাকিস্তানের নাম স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাংক বলেছে, পাকিস্তানে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য ৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলো খাদ্য ও ঋণ সংকটে ভুগছে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানসহ নিম্ন-আয়ের অনেক দেশে মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছে। মধ্য-আয়ের সব দেশেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
তুরস্ক এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন, রাশিয়ার মধ্যে গত মাসে ওই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী পণ্য বহনকারী সব কনটেইনার জাহাজ কোনও ধরনের বাধা ছাড়াই ইউক্রেনীয় বন্দর ত্যাগ করতে পারছে। যা বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা কমিয়ে আনতে সহায়তা করেছে।
বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে গত জুন মাস থেকে বিশ্ব বাজারে খাদ্যশস্যের দামে নাটকীয় পরিবর্তন এবং অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় নিম্নমুখী রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ইউরোপের চলমান যুদ্ধের কারণে অনেক দেশকে তাদের বার্ষিক জাতীয় আয়ের ১ শতাংশেরও বেশি অর্থ খাবারের পেছনে ব্যয় করতে হবে। একই সময়ে অনেক দেশ আর্থিক এই প্রভাব মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হবেন এবং পুরোপুরি ঋণ সংকটে ডুবতে পারে।
জিম্বাবুয়েতে ২৫৫ শতাংশ এবং ভেনেজুয়েলায় ১৫৫ শতাংশে পৌঁছানোর আগেই লেবাননে খাদ্য মূল্যস্ফীতি গত জুনে ৩৩২ শতাংশ ছুঁয়েছে। শীর্ষ খাদ্য মূল্যস্ফীতির হারের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক। দেশটিতে বর্তমানে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ৯৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, গত কয়েক মাসে খাদ্যের দামের বিস্ময় জাগানিয়া বৃদ্ধি বিশ্বের বেশিরভাগ অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে; যার মধ্যে তুলনামূলক উচ্চ আয়ের দেশগুলোও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে উন্নত দেশগুলোও ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও প্রায় ৭৮ দশমিক ৬ শতাংশ খাদ্য মূল্যস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার কিছু দেশ।
+ There are no comments
Add yours