জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
শনিবার (১৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আবরার ফাহাদ হত্যার পর থেকে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। সেই সূত্র ধরে ছাত্রলীগের এ কর্মসূচির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রাজনৈতিক সভা নয়, বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া করতে সভা হয়েছে বলে ছাত্রলীগ নেতারা দাবি করলে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, ছাত্রলীগের ব্যানারে কেন?
শনিবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে সভা চলে রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত। সন্ধ্যা ৭টা থেকে বিক্ষোভকারীরা ক্যাফেটেরিয়ার সামনে জড়ো হতে থাকে। এরপর সভা শেষে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা বের হলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘আবরারের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘রাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সভা শেষে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাল মাহমুদ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম নয়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্য দোয়ার প্রোগ্রাম।
এসময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, তাহলে ছাত্রলীগের ব্যানারে কেন সভা করা হলো? আপনারা বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবেও করতে পারতেন। তখন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা জানান বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এ প্রোগ্রাম করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, যাদের হাতে দিনের পর দিন আমাদের প্রাণের বুয়েট ক্যাম্পাস নরকে পরিণত হয়েছিল, যাদের অত্যাচার ও নির্যাতনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল আবরার ফাহাদ সেই বুয়েট ছাত্রলীগের কিছু সাবেক নেতাকর্মী আজ ক্যাম্পাসে এসে পুনরায় প্রোগ্রাম আয়োজন করে। এর আগেও বুয়েটে ছাত্রলীগের এসব নেতাদের আনাগোনা দেখা গেছে।
তারা জানান, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর গত দুই বছরে শোক দিবসে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিল বুয়েট কর্তৃপক্ষ। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন এবং অংশগ্রহণও ছিল। কিন্তু এবার ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানারে অনুষ্ঠান হওয়ায় তা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেনে নিতে পারছে না।
এ বিষয়ে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক (ডি এস ডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বলা যায় তারা আমাদের থেকে অনুমতি নিয়েছে, আবার নেয়নিও। অনুমতি নেওয়ার সময় জানিয়েছে, তারা সাবেক শিক্ষার্থী, পুনর্মিলনী করবে ক্যাম্পাসে। সে কারণে আমরা অনুমতি দিই। কিন্তু তারা বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে প্রোগ্রাম করতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়।
তিনি বলেন, আমরা যদি জানতাম তারা বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তাহলে অনুমতি দিতাম না। তাই শিক্ষার্থীদের বিক্ষুব্ধ হওয়ার অধিকার আছে। আমি এই মুহূর্তে ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। না হয় স্পটে যেতাম। কাল সকালে আমরা শিক্ষার্থীদের কথা শুনব।
+ There are no comments
Add yours