শ্রেষ্ঠ মুজিব : পর্ব ০১

Estimated read time 1 min read
Ad1

শ্রেষ্ঠ মুজিবঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আত্মজীবনীর উপর ভিত্তি করে লিখিত ও তার প্রতি জাতির শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাকে উৎসর্গ করে খবর বাংলা ২৪’এর সম্মানিত সম্পাদক ও প্রকাশকের রচিত পুস্তক। এ পুস্তক খন্ডে খন্ডে খবর বাংলায় প্রকাশিত হবে। পুস্তকের প্রথম খন্ড নিম্নরূপ— 

৭ বছর বয়স থেকে শিক্ষা ও রাজনীতি জীবন

১৯২৭ সালে যখন বঙ্গবন্ধুর বয়স মাত্র সাত বছর তখন গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতির জনকের প্রাতিষ্ঠানিক ছাত্র জীবনের সুচনা হয়। ১৯২৭ সালে বঙ্গবন্ধুকে গোপালগঞ্জ সীতানাথ একাডেমীতে ৩য় শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়।

১৯৩৪ সালে মাদারীপুরে ইসলামিয়া হাই স্কুলে পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু বেরীবেরি রোগে আক্রান্ত হন। ১৯৩৭ সনে অসুস্থতার কারনে বঙ্গবন্ধুর লেখাপড়া বন্ধ ছিল। পরে আবারও শুরু হয়। ১৯৩৮ সনের ১৬ই জানুয়ারী বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল পরিদর্শনে এলে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরিচয় হয়। ১৯৩৯ সনে সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একনিষ্ট প্রতিবাদ সভা করার দুঃসাহসের কারনে বঙ্গবন্ধু ১ম কারাবরণ করেন।

Sheikh Mujibur Rahman - Wikipedia

১৯৪২ সনে অসুস্থতায় কারনে একটু বেশী বয়সে বঙ্গবন্ধু এন্ট্রাম (প্রবেশিকা) পরীক্ষায় উত্তীর্ন হন। এই বছরেই কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। এই কলেজের বেকার হোস্টেলের ২৪নং কক্ষে তিনি থাকতে শুরু করেন। ১৯৪৪ সনে কুষ্টিয়ায় অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের সম্মেলনে যোগদান করেন। এর মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠিনিক ভাবে তিনি রাজনীতিতে অভিষিক্ত হন। এই বছরই ফরিদপুর ডিষ্টিক্ট এসোসিয়েশনের সম্পাদক নিযুক্ত হন।

১৯৪৬ সনে বঙ্গবন্ধু বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সহকারী নিযুক্ত হন। এই বছরই প্রদেশিক নিবার্চনে তিনি মুসলিম লীগের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৭ সনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানে ইসলামিয়া কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। ১৯৪৭ সনের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় গণতান্ত্রিক যুব কর্মীদের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৮ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সনে ২৩ ফেব্রুয়ারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দীন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষনা করলে বঙ্গবন্ধু তাঁর তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করেন। ১৯৪৮ সনে ২রা মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৪৮ সনের ১১ই মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে সাধারণ ধর্মঘট আহবানকালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। ১৯৪৮ সনের ১৫ই মার্চ বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৪৮ সনের ১১ই সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য বঙ্গবন্ধু আবারও গ্রেফতার হন। ১৯৪৯ সনের ২১ শে জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৪৯ সনের ৩ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা তাদের দাবী আদায়ের উদ্দেশ্যে ধর্মঘট ঘোষনা করলে বঙ্গবন্ধু তার সমর্থন জানান।

১৯৪৮ সনের ২৯ শে মার্চ আন্দোলনে যোগ দেয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুকে অযৌক্তিক ভাবে জরিমানা করে। ১৯৪৮ সনে ২০ই এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সৃষ্ট আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করেন।

১৯৪৯ সনের ২৩ শে জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামীলীগ গঠিত হয় এবং জেলে থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৯ সনের ২৭শে জুলাই বঙ্গবন্ধু হল থেকে মুক্তিপান। মুক্তি পেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে না গিয়ে হাতীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৪৯ সনে পূর্ব বাংলায় দুর্ভিক্ষ শুরু হলে খাদ্যের দাবীতে তিনি আন্দোলন শুরু করেন।

১৯৫০ সনের ১লা জানুয়ারী এই আন্দোলনের কারনে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৫২ সনের ১৪ই ফেব্রুয়ারী বাংলা রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে বঙ্গবন্ধু কারাগারে অনশন শুরু করেন। ১৯৫২ সনের ২১ শে ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রভাষার দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চলে। শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ আরও অনেকে। জেল থেকে বঙ্গবন্ধু এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন এবং একটানা ৩দিন ধর্মঘট অব্যাহত রাখেন।

১৯৫২ সনের ২৭ শে ফেব্রুয়ারী টানা অনশনে অসুস্থ বঙ্গবন্ধুকে স্বাস্থ্যগত কারনে মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৫৩ সনে ১৫ই নভেম্বর প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলীম লীগের কাউন্সিলর অধিবেশনে তিনি সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সনের ৪ই ডিসেম্বর প্রথা সাধারন সব বিরোধী দল মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে।

১৯৫৩ সনের ১০ই মার্চ সাধারণ নির্বাচনে ২৩৭ টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসনে বিজয়ী হন। বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জের আসনে বিজয়ী হন। ১৯৫৪ সনের ২ই এপ্রিল যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠিত হয়। ১৯৫৪ সনের ১৪ই মে বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রী সভায় বয়ঃকণিষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহন করেন। ১৯৫৪ সনের ৩০ শে মে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা বাতিল করেন। বঙ্গবন্ধু এই দিনই করাচী থেকে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং গ্রেফতার হন। ১৯৫৪ সনের ২৩ শে নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জামিনে মুক্তি পেলে বেল জেল গেইটেই তাকে নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়।

১৯৫৪ সনে বঙ্গবন্ধু গেইটে কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৫৫ সনের ৫ই জুন বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান গনপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সনের ১৭ই জুন ঢাকায় পল্টনের জনসভা থেকে বঙ্গবন্ধু ১ম পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্ব শাসন দাবী করেন। ১৯৫৫ সনের ২১ শে অক্টোবর আওয়ামী মুসলীম লীগের বিশেষ কাউন্সিলর অধিবেশন ধর্ম নিরপেক্ষতা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দ প্রত্যাহার করে নতুন নামকরন করা হয় আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু পুনরায় দলের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৫৮ সনের ৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার শাহেদ আলীর উপর আক্রমণ ও তাঁর মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে ইস্কান্দর মির্জা পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারী করেন। ১৯৫৮ সনের ১২ই অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। এই সময় তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ১৯৫৯ সনের ৫ই অক্টোবর বঙ্গবন্ধু মুক্তিপান কিন্তু তাঁর গতিবিধির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। এই সময় তিনি বার বার গ্রেফতার হন এবং মুক্তিপান। চলবে…

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours