ইউক্রেনে সামরিক অভিযান ও তার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের নিষেধাজ্ঞার জেরে আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজার থেকে ডলার-ইউরো কেনার ক্ষমতা হারিয়েছে রাশিয়া।
অর্থনীতি ঠিক রাখতে তাই ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ ভারত, চীন ও তুরস্কের মুদ্রা রুপি, ইউয়ান ও লিরা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জানানো হয়, দেশের প্রধান উন্নয়ন তহবিল ন্যাশনাল ওয়েলথ ফান্ড (এনডব্লিউএফ) পুনর্গঠন ও বাজেট প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখতে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি। এ কারণেই ডলার-ইউরোর বিকল্প হিসেবে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা কেনার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
‘এনডব্লিউএফকে পুনর্গঠন ও বাজেট প্রক্রিয়াকে গতিশীল রাখতে রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় বন্ধুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ইউয়ান, রুপি ও লিরা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে,’ বলা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবৃতিতে।
রোববার এক টুইটবার্তায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফার্স্ট গভর্নর অ্যালেক্সেই জাবোকতিন বলেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর আগে ইউরো-রুবল বাণিজ্য যে পর্যায়ে ছিল, বর্তমানে চীনের মুদ্রা ইউয়ান ও রুবলের বাণিজ্যও সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এ বিষয়টি গোচর হওয়ার পরই ডলার-ইউরোর বিকল্প হিসেবে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা মজুতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তবে দেশটির অনেক অর্থনীতিবিদ এই উদ্যোগে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের যুক্তি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ অনেক দেশেই বর্তমানে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি চলছে। সবচেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফীতিতে ভুগছে তুরস্ক। গত জুনে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৮০ শতাংশ, যা গত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই পরিস্থিতিতে বাছবিচারহীনভাবে মুদ্রা মজুত করা হলে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা অনেক রুশ অর্থনীতিবিদের।
ব্যাংক অব রাশিয়া নিশ্চিত করেছে, সরকার যথেষ্ট বিচার-বিবেচনা করেই বিদেশি মুদ্রার মজুত বাড়াচ্ছে।
+ There are no comments
Add yours