সম্প্রতি চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর এক সভায় যোগ দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, তিনি ভারতে গিয়ে শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার আবেদন করে এসেছেন।
তার এ বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশ তো বটেই ভারতেও প্রবল আলোচনা শুরু হয়েছে। কোনো দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কীভাবে, কোথায় এমন কথা বললেন, তা নিয়ে তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি। ডয়চে ভেলে এবিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে ভারতীয় কূটনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, মোমেন এখন ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলের’ চেষ্টা করলেও ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ভারত সরকারিভাবে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করতে চাইছে না। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।
প্রবীণ সাংবাদিক এবং পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞ শরদ গুপ্তা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় বিস্ময় প্রকাশ করে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘পররাষ্ট্র সম্পর্কের এক ধরনের ভাষা আছে। যাকে কূটনৈতিক ভাষা বলা হয়। কোনো দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন ভাষায় কথা বলতে শুনিনি কখনো। খুবই আশ্চর্য লাগছে। আর সাম্প্রতিক ইতিহাস দেখেছে, অন্য দেশের নির্বাচন বিষয়ে ভারত কথা বললে তার ফল ভালো হয় না।’
শরদের বক্তব্য, সেই ইতিহাস ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশের রাজনৈতিক মহলেরই মনে রাখা উচিত।
এ বিষয়ে তৃণমূলের এক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল ডয়চে ভেলে। কিন্তু তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তার বক্তব্য, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর এই মন্তব্য দুই দেশের রাজনীতিকেই প্রভাবিত করতে পারে। ফলে এনিয়ে তিনি কথা বলতে চান না।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, আবদুল মোমেনের মন্তব্য দুই দেশের অতি দক্ষিণপন্থিদের উসকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বিশেষ করে বাংলাদেশে এর ফলে ভারত-বিদ্বেষী মনোভাব আরো প্রকট হবে। যা কখনোই অভিপ্রেত নয়।
আবদুল মোমেন অবশ্য পরে তার মন্তব্য থেকে দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে– এই অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। আমি এই অভিযোগের ধারে কাছেও নেই।’
+ There are no comments
Add yours