ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান ইস্যুতে জাতিসংঘে এই প্রথম রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে ভারত। বুধবার জাতিসংঘের প্রভাবশালী অঙ্গসংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে অংশগ্রহণের প্রস্তাব উত্থাপন করে পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র। কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্রও যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবে সমর্থন দেয়।
কিন্তু জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ দূত ভাসিলি এন নেবেনজিয়া এই প্রস্তাবে আপত্তি জানান এবং ইউক্রেন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী সদস্য না হওয়ায় বৈঠকে জেলেনস্কির অংশগ্রহণ করা উচিত কি না—এ ইস্যুতে পরিষদের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ভোটের আহ্বান জানান।
নিরাপত্তা পরিষদের বুধবারের বৈঠকে জেলেনস্কি অংশগ্রহণ করবেন কিনা- ইস্যুতে পরিষদের ১৫ সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১৩টিই ভোট দিয়েছে জেলেনস্কির অংশগ্রহণের পক্ষে। এই ১৩ রাষ্ট্রের মধ্যে ভারতও ছিল। চীন এই ইস্যুতে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে এবং বিপক্ষে একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে ভোট দেয় রাশিয়া।
ইউক্রেন ইস্যুতে একে তো রাশিয়ার বিরুদ্ধে এতদিন কোনো অবস্থান নেয়নি ভারত, উপরন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও তার অন্যান্য মিত্ররা যেখানে গত ছয় মাসে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য প্রায় শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছে—সেখানে এই সময়সীমায় দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ফুলে ফেঁপে উঠেছে ভারতের।
আন্তর্জাতিক আন্তঃসরকার জোট ব্রিকসের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া ও ভারতের মধ্যকার বাণিজ্য গত ছয় মাসে ৫গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ভেঙে দিয়েছে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের গত ৪০ বছরের রেকর্ড।
দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ভারত দেশটির নেতৃত্বাধীন একাধিক জোটেরও সদস্য। তবে ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতের এই ‘সুবিধাবাদী’ অবস্থানে স্বাভাবিকভাবেই ভারতের ওপর অসন্তুষ্ট ছিল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সরকারের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন ফোরামে সেই অসন্তোষ প্রকাশও করেছেন।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রকে ‘খুশি করতেই’ বুধবার রাশিয়ার আপত্তি উপেক্ষা করে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জেলেনস্কির যোগদানের পক্ষে ভোট দিয়েছে ভারত।
বৈঠকে উপস্থিত জাতিসংঘের মার্কিন দূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘(ইউক্রেনে) রাশিয়া আসলে কী চায়— তা ইতোমধ্যে স্পষ্ট। রাশিয়া চায় বিশ্বের মানচিত্র থেকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে ইউক্রেনের নাম-নিশানা মুছে যাক।’
+ There are no comments
Add yours