ব্যবসা-বাণিজ্যে ভুলে করেও যে ৪ টি কাজ কখনোও করবেন না!

Estimated read time 1 min read
Ad1

ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপকতার ফলে নতুন করে তার পরিচিতি পাঠকের সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন নেই। মূলত বিনিময় প্রথাকে ব্যবসা-বাণিজ্য বলা হয়। প্রাচীনকালে পণ্যের বিনিময়ে পণ্যের আদান প্রদানের প্রথা চালু ছিল। যাকে ফিকহের পরিভাষায় ‘বাইউল মুকায়াজা’ বলা হয়। কিন্তু এ প্রথায় কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়ায় তা বিলুপ্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে মুদ্রার বিনিময়ে পণ্য আদান-প্রদানের প্রথা চালু হয়।

সাধারণ অর্থে এটাকেই আমরা এখন ব্যবসা-বানিজ্য বলি। আদান-প্রদানের এই প্রথা মানব ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। মানব অস্তিত্বের প্রথম দিন থেকে এ প্রথা চালু হয়েছে, মানব অস্তিত্বের শেষ দিন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। ব্যবসা-বানিজ্যের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছে ইসলাম।

যেহেতু ব্যবসা-বানিজ্য মানব প্রয়োজনের দিক বিবেচনায় সূচিত হয়েছে, সেহেতু ইসলাম মানব-প্রয়োজনের এ গুরুত্বপূর্ণ দিকটি কলুষতামুক্ত রাখার জন্য বেশ কিছু বিধি-বিধান দিয়েছে। একজন সৎ ব্যবসায়ীর নৈতিক দায়িত্ব হলো সে সব বিধানগুলো মেনে চলা। নিম্মে বিধানগুলো আলোচনা করা হলো।

১। প্রতারণার আশ্রয় নেয়া: ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতারণার আশ্রয় নেয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও হারাম। ক্রেতাকে ঠকানোর জন্য পণ্যের দোষ-ত্রুটি গোপন করা জায়েজ নয়। হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’।

অপর একটি হাদিসে আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতারণামূলক বেচাকেনাকে নিষিদ্ধ করেছেন’। (মুসনাদে ইমাম আবু হানিফা)। এ বিষয়ে তিরমিযি শরিফে একটি হাদিসে আছে, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার খাদ্যপণের একটি স্তূপের মধ্যে হাত প্রবেশ করালে কিছুটা আদ্রতা অনুভব করেন, তিনি খাদ্যশস্যের মালিককে বলেন, কি ব্যাপার এ খাদ্যশস্য ভিজা কেন? তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল! এ খাদ্যশস্যের ওপর বৃষ্টির পানি পড়েছিল।

রাসুল (সা.) বলেন, তবে ভিজে যাওয়া পণ্য ওপরে রাখলেনা কেন? যাতে মানুষ তা দেখতে পেত। অতঃপর তিনি ইরশাদ করেন, শোন, যে প্রতারণা করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়’। (মুসলিম শরিফ, মেশকাত শরিফ ২৪৮)। আরবের লোকেরা দুধের পশু বিক্রি করার সময় প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করত। তারা কয়েক দিন পর্যন্ত পশুটির দুধ দোহন না করে রেখে দিত, এতে স্তনে দুধ জমা হয়ে স্তন ফুেল যেত আর গ্রাহক দেখে মনে করত পশুটি প্রচুর দুধ দেয়, এই ভেবে তারা চড়া মূল্যে তা খরিদ করে প্রতারিত হত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এভাকে পশু বিক্রি করতে নিষেধ করেন। (বুখারি শরিফ, মুসলিম শরিফ)।

২। মজুদ দারী: আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর মানুষ অধিক মুনাফা লাভের আশায় পণ্য মজুদ বা ষ্টক করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ এবং মানবতার প্রতি চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শনের শামিল। কিছু মানুষ খাদ্যাভাবে কষ্টে দিনাতিপাত করবে, আর কিছু মানুষ নিজেদের হীন স্বার্থ চরির্তাথ করার জন্য কৃত্রিম খাদ্য সংকট সৃষ্টি করবে- এটা ইসলাম সমর্থন করে না।

৩।মিথ্যার আশ্রয় নেয়া: আজকাল মিথ্যা কথা বলা ব্যবসায়ীদের একটি চিরাচরিত অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। তারা অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য মিথ্যা কথা বলা বা মিথ্যা শপথ করতে মোটেও কুণ্ঠাবোধ করে না। পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে খেও না। তবে পরস্পর সম্মতিক্রমে বেচাকেনার মাধ্যমে’। (সুরা নিসা ২৯) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যবসা-বানিজ্যকে মিথ্যার কলুষতা থেকে মুক্ত রাখার নির্দেশ দেন।

৪। মিথ্যা শপথ করা: এমনিতেই মিথ্যা শপথ করা মারাত্মক গুণাহের কাজ। তার ওপর ব্যবসা-বানিজ্যের ক্ষেত্রে এর নিষেধাজ্ঞা আরো বেশি। কারণ ব্যবসা-বানিজ্যে অন্যের হক সংশ্লিষ্ট থাকে। অথচ আমাদের সমাজের ব্যবসায়ীদের প্রায়ই দেখা যায়, তারা পণ্যকে বেশি দামে বিক্রয় করার জন্য মিথ্যা শপথ করে। যেমন একটি পণ্য বিক্রেতার ১০ টাকা কেনা পড়েছে, সে আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বলে আল্লাহর কসম আমি এই পণ্যটি ১৫ টাকায় কিনেছি।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours