১. হাসিনার নামেই ‘পল্লী’
মাত্র ১৪ বছর বয়সে বিয়ে। বিয়ের নয় বছর পর পাঁচ বছরের কন্যাশিশুসহ তাঁকে ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যান স্বামী। এমন পরিস্থিতিতেও মুষড়ে পড়েননি নওগাঁর হাসিনা বেগম; বরং প্রাথমিক ধাক্কা সামলে গৃহকর্মীর কাজ নেন। জীবনের এমন পরিস্থিতির জন্য বাল্যবিবাহকেই দায়ী করেন হাসিনা। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে ২০১২ সালে তিনি যোগ দেন বিডিওতে (বরেন্দ্র উন্নয়ন সংস্থা)। কাজ শুরু করেন নারী অধিকার, ক্ষমতায়ন, মানবাধিকার এবং খাসজমির মতো অন্যান্য বিষয় নিয়ে।
২. গাইবান্ধার রাণী বেগম
নিজের আগ্রহেই ‘লালগোলাপ নারী কৃষক দল’-এ যুক্ত হন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাণী বেগম। স্থানীয় মসজিদ কমিটিরও তিনি একমাত্র নারী সদস্য। তাঁর নেতৃত্ব প্রদানের গুণাবলিই তাঁকে এ রকম জায়গায় তুলে এনেছে।
৩. জলবায়ুযোদ্ধা ক্রা নু চিং
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে আছে—এমন একটি এলাকা বান্দরবান জেলার থানচি। এখানেই বাস করেন ক্রা নু চিং মারমা। সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে কীভাবে দুর্যোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়, তা-ই নিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি। ‘বাগান রিফ্লেক্ট অ্যাকশন সার্কেল’-এর সদস্যদের সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলার পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন। নিজেদের কমিউনিটিকে সাইক্লোন ও ভূমিধস থেকে রক্ষা করতে তাঁরা আশপাশের পাহাড়সংলগ্ন এলাকায় দুই হাজার গাছ লাগিয়েছেন।
৪. দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মরিয়ম
জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন ও বন্যার তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পটুয়াখালীর কলাপাড়া। এখানকারই বাসিন্দা মরিয়ম বেগম। তিনি নিজের কমিউনিটিকে রক্ষা করার প্রয়াস থেকে দুর্যোগ প্রস্তুতি, দুর্যোগে তাৎক্ষণিক সাড়া প্রদান, পুনর্বাসন ও উন্নয়ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ‘আভাস’-এ (অ্যাসোসিয়েশন অব ভলান্টারি অ্যাকশন ফর সোসাইটি) যোগ দেন। এরপর দুর্যোগের ঝুঁকি প্রশমন ও পরামর্শ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে ‘নারী নেতৃত্বাধীন জরুরি সাড়া’ (ডব্লিউএলইআর) নামে একটি সাংগঠনিক কৌশলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
৫. বস্তিতে অগ্নিনির্বাপণে সবার আগে এগিয়ে আসেন সালেহা
ভোলার বাসিন্দা সালেহা বেগম এখন ঢাকার কল্যাণপুরের একটি বস্তিতে থাকেন। ‘নগর দরিদ্র বস্তিবাসীর উন্নয়ন সংস্থা’র (এনডিবিইউএস) সাহায্যে বিভিন্ন রকমের মানব উন্নয়নমূলক কাজ করছেন তিনি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সালেহা বুঝতে পারেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতির ঘাটতি থাকা এবং সঠিক সময়ে দুর্যোগে সাড়া দেওয়ার অভাব বস্তিতে কতটা প্রকট। তাই সালেহা বেগম অগ্নিনির্বাপণের ওপর প্রশিক্ষণ নেন। এ পর্যন্ত ছয়টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করেছেন সালেহা। বস্তিতে নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে ঘটা সহিংসতা রোধে জোরালো ভূমিকা পালন করছেন।
এই পাঁচ নারীকে সম্প্রতি দুই দিনের একটি উৎসবের আয়োজন করে সম্মাননা জানায় একশনএইড বাংলাদেশ।
+ There are no comments
Add yours