
আজিজুল হক চৌধুরীঃ
কালুরঘাট সেতু নির্মাণে বিআইডব্লিউটিএ অহেতুক বাঁধা ও প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করছে বলে অভিযোগ করেছে ‘কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ’।
উক্ত সংগঠনের পক্ষ হতে জানানো হয়, ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ সরকার সব কিছু বিবেচনায় রেখেই উজানে এসে এই কালুরঘাট সেতুটি নির্মাণ করেছে। সেতুর বয়স এখন নব্বই পেরিয়ে গেছে। মেয়াদ উর্ত্তীন হয়েছে ত্রিশ বছরাধিককাল আগে! কত আট – দশ নাম্বার সিগন্যাল এলো আর গেলো, কখনো কোন জাহাজ এসে এই সেতুতে মাথা ঠুকেনি! ধাক্কা খায়নি। দূর্বিপাকে পড়ে কোন জাহাজকে সেতুর ধারে কাছে এসে নোঙ্গর করতেও দেখা যায়নি কখনো। এই পর্যন্ত কোন জাহাজ কে ঝড় তুফানে কালুরঘাট পর্যন্ত সরিয়ে আনার ও প্রয়োজন পড়েনি। ৪ দশমিক ২ মিটার উচ্চতার কালুরঘাট রেল সেতুর জন্য পূর্বে বিআইডব্লিউটিএ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে কখনো বলে নাই যে এই সেতু (পুরাতন) এখান হতে সরাতে হবে। অথচ এখন তারা ১২ দশমিক ৬২ মিটার বা প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতার নতুন রেল কাম সড়ক সেতুর বিষয়ে আপত্তি দিচ্ছে! পুরাতন কালুরঘাট সেতু বিদ্যমান থাকলেও তাদের আপত্তি আছে মনে হয় না!
এখন নতুন নকশায় প্রস্তাবিত রেল কাম সড়ক সেতু আরো অধিকতর উচ্চতার ৭ দশমিক ৬২ মিটার বা প্রায় ২৫ ফুট হওয়া সত্বেও এই উচ্চতার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে নেভিগেশন চ্যানেল হুমকির মুখে পড়ার অজুহাত তুলে সেতুর উচ্চতা ১২ দশমিক ২ মিটার বা ৪০ ফুট উঁচু করার শর্ত জুড়ে দেয় বিআইডব্লিউটিএ অথচ নদীর এই অংশটিতে কোন জাহাজ চলাচল নেই !
আমরা মনে করি এই শর্ত দিয়ে বিআইডব্লিউটিএ সেতু নির্মাণে অহেতুক জটিলতা তৈরী করছে, বাঁধা সৃষ্টি করছে! নেভিগেশন চ্যানেল রক্ষার নামে বিআইডব্লিউটিএ -এর এই ধরনের আপত্তি মূলত কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাধাগ্রস্হ বা বিলম্বিত করার একটি অপচেষ্টা। অপচেষ্ঠা এই কারণে যে, সামনে বে টার্মিনাল হচ্ছে, মাতারবাড়ি পোর্ট হচ্ছে, সীতাকিন্ডুতে জেটি হচ্ছে, টার্মিনাল হচ্ছে এর পরেও বিআইডব্লিউটিএ কালুরঘাট সেতুর নিচে এনে জাহাজ নোঙ্গর করাবে?
সংশ্লিষ্ট একজন বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর মতে বর্তমানে কালুরঘাট সেতুর উচ্চতা ৪ দশমিক ২ মিটার। এটিকে যদি আরো আট মিটার বা ২৫ ফুটের মতো উচু করা হয় তাহলে সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। কারণ হুট করে রেল লাইন উঁচু করে ফেলা যায় না। বেশ দূর থেকে ক্রমান্বয়ে উচু করতে হয়। আবার একইভাবে বেশ দূরে গিয়ে স্ল্যাভ মিলাতে হয়। প্রস্তাবিত কালুরঘাট সেতুর উচ্চতা যদি ৪০ ফুট করতে হয় সেক্ষেত্রে জান আলী হাট এবং গুমদন্ডি রেলওয়ে স্টেশনকে বহু উঁচু করতে হবে। যা অনেক কঠিন এবং ব্যয়বহুল কাজ। এই অবস্থায় সেতু নির্মাণের পুরো প্রকল্পটি নতুন করে ডিজাইন করাসহ অনেক কিছু পাল্টে ফেলতে হবে। যা সম্ভব হবে না।
আমরা মনে করি বিআইডব্লিউটিএ এর এই অহেতুক জটিলতা সৃষ্টি, একগুঁয়েমি, কেবল এই সেতু নির্মাণ বিলম্বিত ও বাধাগ্রস্হ করার নামান্তর। আমরা আশা করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপে এই সংকট ও সৃষ্ট জটিলতা কাটিয়ে ওঠবে। লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্নের কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু প্রকল্পটি আগামী একনেক মিটিংএ পাশ করে দ্রুত মানুষের প্রাণের দাবীর বাস্তবায়ন হবে।
+ There are no comments
Add yours