বর্তমান কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উদ্যোগে আইনি কাঠামোতে গণমাধ্যমকে যুক্ত করা হচ্ছে। নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো কাজে সাংবাদিকদের নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালনের জন্যই এ উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান জানান, ভোট চলাকালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা যদি বাধা বা নির্যাতনের শিকার হন তাহলে তাদের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ তিন বছরের জেলের শাস্তি নির্ধারণ করতে চায় ইসি।
সর্বনিম্ন এক বছর শাস্তির বিধানও রাখা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে নতুন এ বিধান যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। চলতি সপ্তাহে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ব্রিফিং করে এ রোডম্যাপের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
এবারের রোডম্যাপে আইন সংস্কার; নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগী করতে সবার পরামর্শ; সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ; নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ; বিধি মেনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন; নতুন দল নিবন্ধন ও নিবন্ধিতদের নিরীক্ষা; সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্টদের সক্ষমতা বৃদ্ধি; ভোটের প্রযুক্তির ব্যবহার; দক্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি ও প্রশিক্ষণ, ভোটার প্রশিক্ষণ, সচেতনতা; পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিবন্ধন ও নবায়ন; গণমাধ্যমকে আইনি কাঠামোয় সম্পৃক্ত করার বিষয়গুলো রয়েছে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, অনেকটা আগের মতোই সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ রোডম্যাপে সব কাজের সম্ভাব্য সময় ধরে বাস্তবায়নসূচি থাকবে। প্রযুক্তির ব্যবহারকে আরও বাড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এক দফা সংস্কার প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
অংশীজনদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। যখনই কমিশন মনে করবে তখনই ফের এ ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে বলে জানান তিনি। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত যেসব কাজ করবে ইসিঃ
আইন সংস্কার : আইনি কাঠামো পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়গুলো চিহ্নিত। আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা।
প্রশিক্ষণ : ইসি সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে চলবে।
দল নিবন্ধন : নতুনদের আবেদন শুরু, আগামী বছরের শুরুতে নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত। নিবন্ধিত দলগুলোর শর্ত যাচাই-বাছাই।
ভোটার তালিকা : বাড়ি বাড়ি গিয়ে মে মাস থেকে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ, ডিসেম্বরে ডেটা অন্তর্ভুক্ত; জানুয়ারিতে খসড়া প্রকাশ, দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি এবং ২০২৩ সালের মার্চ হালনাগাদ ভোটারদের নিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ। বর্তমানের ১১ কোটি ৩৩ লাখ ভোটার। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৩০০ আসনের ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকা মুদ্রণ, সিডি প্রণয়ন ও বিতরণ।
সীমানা নির্ধারণ : ভোটার সংখ্যা, জনশুমারি ও ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে জিআইএস পদ্ধতিতে সীমানা পুনর্নির্ধারণ। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম সম্পৃক্তদের সঙ্গে আলোচনা এবং খসড়া প্রকাশ। ৩০০ আসনের সীমানার গেজেট প্রকাশ।
ভোটকেন্দ্র : ভোটকেন্দ্র যাচাই, খসড়া, দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি। তফসিল ঘোষণার পর (ভোটগ্রহণের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ) চূড়ান্ত প্রকাশ।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
+ There are no comments
Add yours