ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় অস্থির এশিয়ার চালের বাজার

Estimated read time 1 min read
Ad1

চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞায় এশিয়ায় প্রধান এই খাদ্যশস্যের বাণিজ্যিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ক্রেতারা এই অঞ্চলের বিকল্প উৎস ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারের চাল নিতে চেয়েও পাচ্ছেন না।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এই তিন দেশের বিক্রেতারাও চাল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।

সোমবার শিল্প কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ভারতে বর্ষা মৌসুমে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় ধান চাষ হ্রাস পেয়েছে।

যে কারণে দেশীয় বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে বিশ্বের বৃহত্তম শস্য রপ্তানিকারক ভারত গত বৃহস্পতিবার থেকে ভাঙা চালের রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। একই সঙ্গে অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের চালের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি।

গত ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানির উৎপাদনকারী রাশিয়ার জ্বালানি ও খাদ্যশস্যের সরবরাহ ভেঙে পরায় বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

এর ফলে সরবরাহ সংকট ও ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইরত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার নানা ধরনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছে।

এর মধ্যে সর্বশেষ ভারত গত বৃহস্পতিবার চালের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ভারতের এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় ইতোমধ্যে এশিয়ার বাজারে এই খাদ্যশস্যের দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্বেগ সত্ত্বেও চলতি সপ্তাহে চালের দাম আরও বাড়তে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

গত বছর ভারতের চাল রপ্তানি রেকর্ড ২ কোটি ১৫ লাখ টন ছুঁয়েছে। ভারতের এই চাল রপ্তানি বিশ্বের বৃহত্তম শস্য রপ্তানিকারক চার দেশ। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট রপ্তানির চেয়েও বেশি।

বিশ্বে চীনের পর চালের প্রধান ভোক্তা দেশও ভারত। বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশেরও বেশি চালের মার্কেট শেয়ার রয়েছে ভারতের। অভ্যন্তরীণ উচ্চ মজুত আর স্থানীয় বাজারে কম দামের কারণে গত দুই বছর ব্যাপক ছাড়ে চাল বিক্রি করেছে ভারত। যা এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দরিদ্র দেশকে গমের দামের ঊর্ধ্বগতির সাথে লড়াই করতে সাহায্য করেছে।

বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে চাল রপ্তানি করে ভারত। দেশটির চালান হ্রাস পেলে বিশ্বজুড়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দেখা দেবে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সোমবার ভিয়েতনামের ৫ শতাংশ ভাঙা চাল প্রতি টন ৪১০ ডলারে বিক্রি হয়েছে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩৯০ থেকে ৩৯৩ ডলারে।

বিশ্বে সাধারণ গ্রেডের চাল আমদানির শীর্ষে রয়েছে চীন, ফিলিপাইন, বাংলাদেশ এবং আফ্রিকার দেশ সেনেগাল, বেনিন, নাইজেরিয়া এবং ঘানা। অন্যদিকে, ইরান, ইরাক এবং সৌদি আরব প্রিমিয়াম গ্রেডের বাসমতি চাল আমদানি করে।

কোভিড-১৯ মহামারিতে সরবরাহ বিঘ্ন এবং সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুই বছর ধরে বাম্পার ফলন আর রপ্তানিকারকদের কাছে প্রচুর পরিমাণ মজুত থাকায় চালের দামে তেমন কোনও প্রভাব দেখা যায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours