রাঙামাটি শহরের একমাত্র গণপরিবহন অটোরিকশা পোড়ানো ও ভাঙচুরের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে সংগঠনটি।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় পুরো শহরের অটোরিকশাচালকরা শিল্পকলা একাডেমির সামনের সড়কের সমাবেশে উপস্থিত হন। এতে বক্তব্য রাখেন চালক ইউনিয়নের সভাপতি পরেশ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবুসহ সংগঠনের নেতারা।
সমাবেশে বক্তারা রাঙামাটির বিভিন্ন সড়কে পরিবহন শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান । যে গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুর করা হয়েছে, সেই গাড়ি দুটির ক্ষতিপূরণ প্রদান, এর আগে সন্ত্রাসীদের হাতে অপহরণের পর নিখোঁজ অটোরিকশাচালকদের উদ্ধার ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তারা।
এর আগে, শনিবার রাত ১১টার দিকে আসামবস্তি-রাঙাপানি সড়ক দিয়ে নিজের গাড়ি চালিয়ে ভেদভেদির দিকে আসছিলেন সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন। সিএনজি পাম্পের একটু আগে তার গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়।
পাথরটি তার পায়ে লাগে এবং তিনি আহত হন। পাথরের আঘাতে গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিপদ বুঝতে পেরে তিনি দ্রুত গাড়ি নিয়ে ওই এলাকা থেকে পালিয়ে যান। পরে আমাদের ফোনে ব্যাপারটি জানালে আমরা সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যাই এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে আসেন।
রাঙ্গামাটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, প্রশাসন আমাদের নিরাপদ সড়ক দিতে ব্যর্থ। সেই কারণেই সন্ত্রাসীরা আবারো নিরীহ চালকের ওপর হামলা ও ভাঙচুর করার সাহস পেল।
এ কারণে আমরা এই ধরনের কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হলাম। সমিতির পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণার পর পরই মধ্যরাতে রাঙ্গামাটি শহরে মাইকিং করে ধর্মঘটের ঘোষণা প্রচার করা হয়।
রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। আমরা স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন চালকের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে সকাল থেকে কোনো ধরনের সিএনজিচালিত অটোরিকশা না চলায় বিকল্পভাবে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে যাচ্ছেন যাত্রীরা। তবে বেশির ভাগ যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে।
রোববার সকালে ঢাকা থেকে সপরিবারে রাঙ্গামাটি আসেন আফসার আহমেদ। তিনি বলেন, সকালে ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি এসে নামলাম। এখন এখানে এসে দেখছি, সিএনজি অটোরিকশার ধর্মঘট চলছে। রাঙ্গামাটিতে অন্যান্য গণপরিবহন তো চলে না। এখন কীভাবে যে বেড়াতে বের হবো, বুঝতে পারছি না।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাঙ্গামাটির আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কে চাঁদার টোকেন না থাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরকিশা পুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। ক্ষতিগ্রস্ত চালক কামাল জানিয়েছিলেন, ৪-৫ জন সশন্ত্র পাহাড়ি যুবক তার গাড়ি আটকিয়ে মারধর করে এবং পরে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ঘটনার পর রাঙ্গামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে আল্টিমেটাম দেয় অটোরিকশা চালক সমিতি ও মালিকরা। সেই ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই নতুন আরেকটি ঘটনা মালিক-চালকসহ জনমনে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
+ There are no comments
Add yours