মোংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল’র বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় সরকার সমন্ত্রনালয়ের নিদের্শনায় একটি প্রতিনিধি দল।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অভিযুক্ত ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন ও তদন্ত করেন এ প্রতিনিধি দলটি।
দীর্ঘদিন থেকেই এলাকার গরিব ও অসহায় হতদরিদ্রদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের চাউলে মাপে কম ও পরিবর্তন করে দেয়া ও সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করে অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদের অভিযোগ ও বিক্ষোভ করে আসছিল এলাকাবাসী।
তবে সকল অভিযোগই মিথ্যা এবং এলাকায় উন্নয়ন মুলক প্রকল্পগুলো বাধা গ্রস্ত করার জন্য এমন অভিযোগ বলে দাবী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডলের।
তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর সুষ্ঠ বিচারের আশায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে মিঠাখালী ইউনিয়নে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়োমের অভিযোগে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেণ এলাকাবাসী।
এছাড়াও গত দুই মাস যাবত ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় শহস্রাধিক নারী-পুরুষ উপজেলা পরিষদ ও ইউপি পরিষদের সামনে রাস্তায় মাববন্ধন ও বিক্ষোভ সহ নানা কর্মসুচি পাল করে আসছিল ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এঘটনা নিয়ে গত সপ্তাহে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি জেলা প্রশাসক। সরেজমিনে তদন্ত করে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নিদের্শনা দেয়াও হয়। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে সিনিয়র সহকারী সচিব জয়দেব চক্রবর্তী ও মোঃ আলিমুজ্জামান সহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সোমবার মিঠাখালী ইউনিয়নে সরেজমিনে তদন্ত শুরু করেন তারা।
মোংলা উপজেলা পরিষদ সুত্রে জানায়, মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নে প্রায় ৭০/৭৫ হাজার লোকের বসবাস। এর মধ্যে হতদরিদ্র দুঃস্থ্য নারীদের (ভি ডাব্লিউ ডি)’র খাদ্য সহায়তার আওতায় রয়েছে প্রায় ৪৭৫জন নারী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভিজিডির আওতায় নারীরা প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল পেলেও মিঠাখালী ইউপি পরিষদ থেকে দেয়া হচ্ছে মাত্র ২৪/২৫ কেজি চাল। এছাড়া ঝাটকা সংরক্ষন জেলেদের ৪ মাসে ১৬০ কেজির স্থলে দিয়েছে মাত্র ১৪০ কেজি ও সামুদ্রীক জেলেদের ৬৫ দিনের জন্য ৮৬ কেজির স্থলে দেয়া হয়েছে ৬০ কেজি চাল।
গত ২৩ আগষ্ট থেকে এ চাল বিতারণ শুরু করে মিঠাখালী ইউয়িন পরিষদ থেকে। এছাড়া সরকারী ভাবে সেদ্ধ চাল দেয়ার জন্য বরাদ্ধ থাকলেও দুর্নীতির মাধ্যমে কৌশলে বাজার থেকে কম মুল্যের নিম্নমানের আতপ চাল দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেণ বিক্ষোভ কারীরা। এছাড়া সরকারী গাছ কর্তন, স্বজনপ্রতিতি, সরকারী বরাদ্ধে অর্থ লুটপাট সহ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ তোলেন এলাকাবাসী।
অসহায় দুঃস্থ্য নারী-পুরুষ ও জেলেরা অভিযোগ করেণ, ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল একটি চোরাকারবারী গ্রুপের সহায়তায় চালে মাপে কম ও সেদ্ধ চালের পরিবর্তে কমদামী নিম্নমানের আতপ চাল বিতারণ করছে। দুর্নীতির মাধ্যমে এ চাল থেকেই হাতিয়ে নিয়েছে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের সরকারের দেয়া সকল উন্নয়ন মুলক কার্যক্রমেও দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছে চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল ও তার স্বজন সহ সাঙ্গপাঙ্গরা বলে দাবী এলাকাবাসীর। তাই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানকে আইনের আয়োতায় এনে বিচারের দাবী জানায় তারা।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাবু উৎপল কুমার মন্ডল বলেন, তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত, তার সুনাম নষ্ট করা ও ইউনিয়নের উন্নয়ন মুলক কার্যক্রমে বাধা দেয়ার জন্যই মিথ্যাচার করে তাকে হেয় করছে বলে দাবী চেয়ারম্যানের।
তদন্ত কমিটির প্রধান সিনিয়র সহকারী সচিব জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের সুত্র ধরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে সরেজমিনে সেই তদন্তও শুরু করা হয়েছে, জেলা প্রশাসক মহদয়ের কাছে এর প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তার পর দোষী প্রমানিত হলে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাবস্তা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট)
+ There are no comments
Add yours