চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভা ৭ নং ওয়ার্ডের মানুষ এখন বড় দুর্গন্ধের সমস্যার সম্মুখীনে পড়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় থেকে সংগৃহীত নিত্যদিনের ময়লা আবর্জনা ফেলে আসছে, পৌরসভা শ্রীমাই ব্রিজ থেকে গিরি চৌধুরী বাজার পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। তবে নতুন ভাবে সেই দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত ময়লা আবর্জনা দৈনন্দিন ফেলা হয় পটিয়া পৌরসভা ৭ নং ওয়ার্ডের একটি সড়কের পাশে।
সেই সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আরকান মহাসড়ক। এ আধা কিলোমিটার এলাকা দেখলে মনে হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক নয়। এটি যেন পটিয়া পৌরসভা ময়লা ফেলার বড় স্থান। এখানে ট্রাক যোগে প্রতিদিন ফেলা হয় পটিয়া পৌরসভার ময়লা ও আবর্জনা। গত কয়েকদিনে টানা বৃষ্টিতে এ ময়লা আবর্জনাগুলি মহাসড়কের উপর চলে আসে।
ফলে এ ময়লা ও বর্জ্যরে চলাচল করতে কষ্ট ও অতিষ্ট মহাসড়কের পূর্ব পাশে বাহুলী গ্রাম।আর দক্ষিণপার্শ্বে কচুয়াই ইউনিয়ন। নেই কোনো সীমানা প্রাচীর এবং দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বাতাসে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ।
ফলে দুর্গন্ধের কারণে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভূগছে সাধারণ জনগন। পটিয়া পৌর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, হাজার হাজার শিশু, বৃদ্ধসহ চলাচলকারী সাধারণ জনগণ। ময়লা-আবর্জনা দুর্গন্ধে দুর্বিসহ জীবন পার করছে ওই এলাকার মানুষ।
দিন দিন দুষিত হয়ে পড়ছে এলাকার পরিবেশ ও নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি, মরে যাচ্ছে পুকুরের মাছ। এলাকাবাসী বার বার পৌর মেয়র ও কাউন্সিলর কে বিষয়টি জানালে ও কোনো সুরাহা পাইনি ভুক্তভোগীরা।
পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল বলেন, এই ময়লা পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগ থেকে ফেলা হয় সেখানে, প্রায় ৩০ বছর ধরে এখানে ময়লা গুলো ফেলা হয়।সরকারি ভাবে কোনো জায়গায় ক্রয় করা হলে, তখন ব্যবস্থা নেয়া হবে।তিনি আরো বলেন, আমি সংগঠন করতে আসিনি, উন্নয়ন করতে এসেছি।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে শ্রীমাই ব্রিজের পূর্ব পাশ থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলে আসছে দীঘদিন ধরে। মহাসড়কের উত্তর পাশে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড আর দক্ষিণ পাশে কচুয়াই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে ।
কিন্তু সম্প্রতি কোরবানি পশুর বর্জ্য মনসা পূজা ছাগলের নারীভুড়ি খোলা আকাশের নিচে মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এ ময়লা আবর্জনা ও পশুর বর্জ্যগুলির পঁচা দুর্গন্ধ যুক্ত বাতাস চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে কচুয়াই ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের এলাকার প্রায় ৭’শ পরিবার ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের যানবাহন করে চলাচলকারী হাজার হাজার যাএী প্রতিদিন চলাফেরা করছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে। ইতিমধ্যে এই বর্জ্যরে গন্ধে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে শ্বাসকষ্ট ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন বায়ু এবং পানিবাহীত রোগে। আর ৬’শ গজের মধ্যে রয়েছে একটি কামিল মাদ্রাসা ও একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, শুধু ঘুমের সময় ছাড়া এই দুর্গন্ধ থেকে কোনোভাবেই মুক্তি মেলে না এলাকাবাসীর। বায়ুদুষণের কারণে এলাকার মানুষ বমি, পেটের পিড়া, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগসহ নানা রোগে ভূগছে। এই দুর্ভোগ থেকে প্রতিকার পেতে এলাকার মানুষ প্রায় প্রতিবাদ করলেও মেলে না কোনো সুফল।
এলাকার রমেশ দে নামের এক বৃদ্ধ জানান, ময়লার গর্ন্ধে ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। ঘর থেকে কাজের প্রয়োজনে বের হলে শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করি। অতিদ্রুত এ ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য এ স্থান থেকে সরিয়ে ফেলা না হলে এলাকার মানুষরা বসবাস করা দায় হয়ে পড়বে।
খবর বাংলা ২৪ এর প্রতিবেদক, সরেজমিনে গিয়ে দেখে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের শ্রীমাই ব্রিজ এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের উত্তর পাশে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে ময়লা আবর্জনার স্তপ ফেলছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
ময়লা স্তপগুলো বৃষ্টির পানিতে ভিজে মহাসড়কের উপরে ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য চলে আসছে রাস্তার উপর। দুর্গন্ধের জন্য ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলা করা যাচ্ছে না। রিকশা চালক জামাল উদ্দিন জানান, প্রতিদিন এ মহাসড়ক দিয়ে কমলমুন্সির হাট থেকে পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার, কামাল বাজার ও থানার হাটের বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন আসা যাওয়া করলে নাকে হাত বা কাপড় দিয়ে রিকশা চালাতে হয়।
দীর্ঘদিন ধরে দেখছি প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে ময়লা আবর্জনার স্তপ এ জায়গায় ফেলছে পৌরসভা। তবে এই ময়লার দুর্গন্ধের জন্য রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে এলাকাবাসীর কষ্টসাধ্য হয়ে যায় ।
তিনিও বার বার এই বিষয়টি নিয়ে মেয়র সাহেবের সাথে কথা বলেছিলেন বলে জানান। তবে ময়লা ঐ স্থান থেকে সরিয়ে নেয়ার কোনো উদ্যোগ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের আছে কিনা জানতে চাইলে কাউন্সিলর বলেন, এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা একমাত্র মেয়র সাহেব ভালো বলতে পারবেন।
+ There are no comments
Add yours