Breaking News
Primary Doctor's Society

তারুণ্যের শ্রেষ্ঠ সময়

তারুণ্য মানে না কোন নিষেধ -বাধা। তারুণ্যের উদ্দামতা সাগর পাড়ি দেয়ার মতো দুঃসাহস যেমন রাখে, ঠিক তেমনি এ বয়সে হিমালয় পর্বত জয় করার মতো দুঃসাহস রাখে।

জল, স্থল, আকাশ, মহাকাশ, পর্বত কোথায় নেই তারুণ্যের ছাপ। যেখানেই চোখ পড়বে তারুণ্যের জয়গান। তারুণ্যে উচ্ছ্বাস কখনও কখনও সময়ের সঙ্গে বা নির্দিষ্ট কোনো বয়স সীমায় বেঁধে রেখে বর্ণনা করা যায় না।

অসম্ভবকে সম্ভব করতে ঝুঁকি নিতে পারার বয়স তারুণ্য, হুটহাট আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠার বয়স তারুণ্য। তারুণ্যের ছাত্র জীবন মধুর জীবন। এখানে নেই কোনো সাংসারিক জটিলতা, নেই কোনো ভাবনার অবকাশ।

জীবন এখানে দীপ্তকণ্ঠে গেয়ে ওঠে- মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্যম, মোরা ঝর্ণার মতো চঞ্চল, মোরা বিধাতার মতো নির্ভয় মোরা প্রকৃতির মতো সচ্ছল। প্রত্যয় আর চেতনার উৎস হচ্ছে তারুণ্য। অনুপ্রেরণার অজেয় শক্তি। যারা নিজ প্রতিভায়, উদ্যমে, কর্মযজ্ঞে বদলে দেয় পৃথিবী তারাই চিরনবীন।

তাদের নিয়েই নজরুল-সুকান্ত রচনা করেছেন দ্রোহের-বিপ্লবের হাজারও কবিতা ও গান। তরুণ বয়সটাই হচ্ছে নানা রোমাঞ্চকর কাজে পা বাড়ানোর শ্রেষ্ঠ সময়। আস্থার হাতটা ধরে অজানাকে জানতে বেরিয়ে পড়তে কেবল তরুণরাই পারে।

বোরিং বাস জার্নি, ঘুমিয়ে পড়া বা কানে হেডফোন দিয়ে একা একা গান শোনা এসব কোনকিছুরই অবকাশ নেই। হৈহুল্লোড় করে, সবাই মিলে গান গাইতে গাইতে ঘুরে বেড়িয়ে, হাসি ঠাট্টা করে কখন যে কেটে যায় ওই রোমাঞ্চকর দিনগুলো, খবরই থাকে না। তারুণ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাসে কাটিয়ে দেখা যায় জীবনের রঙিন মুহূর্ত।

তরুণ বয়সের বন্ধুরা হয়ে উঠে জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। যাদের ছাড়া একমুহূর্ত চলা যায় না। চিন্তাও করা যায় না কোনো কিছু। আজ এখানে ঘোরাঘুরি তো কাল আরেক জায়গায়।

ক্যাম্পাস জীবনের সবচেয়ে আপনজন তো এরাই। সময় সুযোগ পেলেই যাদের সঙ্গে জমে ওঠে গল্প, আড্ডা, গান। তরুণদের আড্ডায় প্রতিদিন যেন আরও নতুন করে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

সারা দিনের হাজারও ব্যস্ততা সত্ত্বেও এক ডাকেই কাছে পাওয়া যায় সবাইকে। দিন গড়িয়ে বিকাল বা গোধূলি লগ্নেও যেন কারোরই কোনো ক্লান্তি নেই, ব্যস্ততা নেই, বিকালের নতুন উচ্ছ্বাসে শুরু হয় তরুণদের আড্ডা।

ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনসহ নানা ব্যস্ততার পর বা এসবের ফাঁকেও আড্ডা চলে অবিরত। নিত্যনতুন অভিজ্ঞতা, শিল্প-সাহিত্য, রাজনীতি-অর্থনীতি, প্রেম-ভালোবাসা, ক্লাস-পরীক্ষা সবই উঠে আসে এই আড্ডাবাজিতে। গল্পে আর আড্ডায় কাটে সময়। কখনও কখনও গানে গানে ছড়িয়ে পড়ে তারুণ্যের উদ্দামতা, কখনও ছোটখাটো খেলায় মেতে ওঠে তারুণ্য ভরা সবুজ প্রাণ।

আর ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপার তো আছেই। সময় সুযোগ মিললেই সব পিছুটান ভুলে তরুণরা চলে যেতে পারেন কাছে কিংবা দূরে কোথাও। প্রকৃতি, সাগর, পাহাড় কিংবা ইটপাথরের নগরে একচিলতে খোলা হাওয়ায় একদল বন্ধু-বান্ধব মিলে ঘুরে আসতে পারেন। খাওয়া আর গল্পের তালে তালে স্মৃতির পাতায় স্মরণীয় করে রাখতে পারেন তারুণ্যকে। টুংটাং গিটারের শব্দেও জমিয়ে তুলতে পারেন ক্যাম্পাসের আড্ডা।

দলবেঁধে বন্ধুরা মিলে চায়ের কাপে ঝড় তুলতে পারেন তরুণ বয়সে। যার রেশ ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপের চ্যাটিংয়ে পাওয়া যাবে না কখনও। কিন্তু তাই বলে শুধু আনন্দ আড্ডাতে তরুণ বয়সটা পার করা উচিত নয়। তারুণ্য জয়ের বয়স, অসম্ভবকে সম্ভব করার বয়স।

এ বয়সটায় যেমন নিজের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে কাজ করা উচিত, তেমনি দেশের জন্য, দশের জন্য ভালো কাজে আত্মনিয়োগ করেও তারুণ্যকে স্মরণীয় করে রাখতে হবে।

Check Also

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সুরক্ষায় ২১ শতকের তারুণ্যের দায়

২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতার হওয়ার কয়েক ঘন্টা পূর্বে আওয়ামীলীগের জাতীয় পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে স্বাধীন …

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Primary Doctor's Society
Sahifa Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.