যাত্রীবাহী বাসে ফেসবুক ও টিকটকারদের ভিডিও ধারণ বন্ধে ১৬টি বাস কোম্পানিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট ও জজকোর্টের ৯ আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মেহেদী হাসান শুক্রবার (৭ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানান।
শনিবার (৮ অক্টোবর) জনস্বার্থে ৯ আইনজীবীর পক্ষে নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মেহেদী হাসান। ১৬টি বাস কোম্পানিকে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট ও জজকোর্টের ৯ আইনজীবী।
নোটিশ প্রাদানকারী ৯ আইনজীবী হলেন- অ্যাডভোকেট এস. এম. জাবিরুল হক (কাজল), মো. মেহেদী হাসান, আদলু সাইন, এইচ. এম. রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, মুশফিকুর রহমান সেতু, মো. হুমায়ুন কবির সরকার, আবু তাহের রনি, মো. ওবায়দুল্লাহ কাজী ও মো. মিলন হোসেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতিকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে পরিবহন মালিকদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, সড়ক ও মহাসড়কে আপনাদের প্রতিষ্ঠানের বাস ও বিভিন্ন ধরনের পরিবহন যাত্রী সেবায় নিয়োজিত রেখে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাসগুলোতে চালকরা বেপরোয়াভাবে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকি এসব দুর্ঘটনায় অনেক যাত্রী পঙ্গু হওয়াসহ নিহত পর্যন্ত হয়েছেন। এতে আপনাদের পরিবহনগুলোরও অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর পেছনে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনা ও উৎসাহ রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় নোটিশে।
নোটিশে আরও বলা হয়, এ মহলটির অধিকাংশ ব্যক্তি ফেসবুক ও টিকটক ব্যবহার করেন। এই সব ব্যক্তি ফেসবুক ও টিকটক ছাড়াও অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়াতে একাউন্ট বা চ্যানেল খুলে চালকদের দ্রুত গতির ভিডিও প্রকাশ করে।
গাড়ি চালানোর সময় তারা উৎসাহ প্রদান করে। সেসব দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুক গ্রুপ-পেইজে এবং টিকটকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছে।
ফেসবুকার ও টিকটকাররা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাস চালকদের মধ্যে এক অসুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করে চলেছে উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়, গাড়ি চালানোর সময় ফেসবুকার ও টিকটকাররা চালকের পাশে বসে বেপরোয়াভাবে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো সহ বাস চালকদের উসকে দিয়ে বারবার হর্ন বাজানো, ওভারটেকিং, বাউলি দেয়া, গুটি দেয়া, ডিপার লাইট দেয়া, হার্ড ব্রেকিং করাসহ বিভিন্নভাবে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন, যা ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেইজ, ইউটিউব ও টিকটকের ভিডিও ছবি থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।
নোটিশটি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে মতামতগুলো প্রতিপালন এবং স্ব-স্ব বাস কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবহনের চালকের প্রতি গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা ও সচেতনতামূলক নোটিশ ইস্যুর করা জন্য জনস্বার্থে অনুরোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে নোটিশের অনুরোধগুলো যথাযথভাবে পালনপূর্বক বিষয়টি নোটিশদাতাদের জানাতেও বলা হয়েছে।
অন্যথায় ভবিষ্যতে যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্য বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
+ There are no comments
Add yours