
রাজধানীর ভাষানটেকের ১৫০ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প এবং ঢাকার বিজয় সরণির কলমিলতা বাজার নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেছে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের পরিবার।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন। এসময় তারা সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে ছয় দফা কর্মসূচিগুলো—
১। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের বাধাগুলো দূর করা এবং ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম কর্তৃক কলমিলতা বাজারের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের যথাযথ নির্দেশ ও সেই নির্দেশ প্রতিপালনে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা।
২। ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক এনএসপিডিএল’র চুক্তি বাতিল আদেশ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা।
৩। ষড়যন্ত্রের দায়ে ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হাইকোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা।
৪। ভূমি মন্ত্রণালয় ও এনএসপিডিএল’র মধ্যে যাবতীয় বিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তি সালিশি বোর্ডের মাধ্যমে সমাধান করা।
৫। ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প সংক্রান্ত দুর্নীতি দমন কমিশন তথা দুদকের বন্ধ হওয়া তদন্ত কার্যক্রম পুনরায় চালু করা। সেই সঙ্গে ডিএনসিসি মেয়র আতিকের বিরুদ্ধে গত ১৯/৫/২০২১ তারিখে দায়ের করা অভিযোগটি তদন্ত পূর্বক জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন জাতির সামনে তুলে ধরা।
৬। শহীদ পরিবার হিসেবে আব্দুর রহিমের পরিবারের জানমাল ও সম্পদের সুরক্ষা প্রদান করা।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প একটি পাইলট পরীক্ষামূলক প্রকল্প। এই প্রকল্পে সরকারের একটি টাকাও বিনিয়োগ করা হয়নি। পুরো প্রকল্পটি আমার বাবা তার নিজের সম্পদ বিক্রি করে গড়ে তুলেছেন। নর্থ-সাউথ প্রপার্টি একটি বিনিয়োগ ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এটি একটি পিপিপি অর্থাৎ সরকারি বেসরকারি অংশীদার প্রজেক্ট। সরকারের সঙ্গে ২০০৩ সালে করা চুক্তি বাতিলের কোনো শর্ত নেই। সরকার চাইলেও কোনো শর্ত কিংবা চুক্তি বাতিল করতে পারবে না। ২০১০ সালে প্রকল্প থেকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসী কায়দায় এক কাপড়ে নর্থ-সাউথ প্রপার্টি লিমিটেডের চেয়ারম্যান তথা আমার বাবার পরিবার এবং তার কর্মচারীদের প্রকল্প থেকে অন্যায়ভাবে গায়ের জোরে বের করে দেওয়া হয়।
নুরতাজ আরা ঐশি বলেন, ঢাকার বিজয় সরণির কলমিলতা বাজারটির প্রকৃত মালিক আমার বাবা। আজ অবধি ডিএনসিসি ও তার পূর্বসূরিরা পরস্পর পরস্পর যোগসাজশে আইনের অপপ্রয়োগ করে জবরদখল করে রেখেছে। যদিও হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্ট আমাদেরকে দুই মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
একপর্যায়ে তৎকালীন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক কোর্টের আদেশ মেনে সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকার ডিসিকে লিখিত প্রস্তাব পাঠান। হঠাৎ মেয়র আনিস মারা যান। এই সুযোগে ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম দুর্নীতির মানসিকতায় ঢাকার ডিসিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চাহিদাপত্র না দিয়ে বছরের পর বছর সময়ক্ষেপণ করছেন।
+ There are no comments
Add yours